গাজায় আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী পাঠানোর প্রস্তুতি, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে হবে ২০ হাজার সেনার “আইএসএফ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭:১০, ৭ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ০৮:১০, ৭ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত
গাজায় যুদ্ধবিরতির পর স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী—ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি ফোর্স (আইএসএফ)। যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, এই বাহিনীর মূল দায়িত্ব হবে গাজায় স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা, মানবিক সহায়তা কার্যক্রম রক্ষা করা এবং সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এক মার্কিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানায়, আইএসএফ বাহিনী গঠনের অনুমোদন পেতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি প্রস্তাবের খসড়া পাঠানো হয়েছে। এই বাহিনীকে গাজা উপত্যকার সামরিক অবকাঠামো ধ্বংস ও পুনর্গঠন রোধের ক্ষমতা দেওয়া হবে। তাদের দায়িত্বের মধ্যে থাকবে হামাসসহ অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র নিষ্ক্রিয়করণ ও নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করা।
খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আইএসএফ গাজার অভ্যন্তরে একটি “নতুন প্রশিক্ষিত ও যাচাইকৃত ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনী”-এর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে। তারা ইসরায়েল ও মিশরের সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা
বজায় রাখবে এবং আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে সহযোগিতা করবে।
২০ হাজার সেনা নিয়ে গঠিত হবে বাহিনী
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত I
আইএসএফ বাহিনীর সদস্যসংখ্যা হবে প্রায় ২০ হাজার। তবে যুক্তরাষ্ট্র নিজে কোনো সেনা পাঠাবে না। বরং তারা ইতিমধ্যে ইন্দোনেশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত , মিশর, কাতার, তুরস্ক ও আজারবাইজানসহ কয়েকটি মুসলিম দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বাহিনী গঠনে অংশ নেওয়ার জন্য।
এক সিনিয়র মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা কী ধরনের আন্তর্জাতিক অনুমোদন চায়, সেটা নির্ধারণের কাজ চলছে। প্রায় সব দেশই জাতিসংঘের ম্যান্ডেট চায়।”
তবে ইসরায়েল এর আগে জানিয়েছিল, তারা গাজায় তুর্কি সেনা মোতায়েনে সম্মত নয়। তা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের মতে, আলোচনায় সব পক্ষের সঙ্গে “নিরবচ্ছিন্ন সংলাপ” চলছে।
হামাসের নিরস্ত্রীকরণই মূল চ্যালেঞ্জ
খসড়া প্রস্তাবে হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব আইএসএফ-এর হাতে দিলেও, যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা, হামাস নিজেও চুক্তির শর্ত অনুযায়ী অস্ত্র সমর্পণ করবে। তবে এখন পর্যন্ত হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে নিরস্ত্রীকরণে সম্মত হয়নি—বরং অতীতে তারা এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল।
এক মার্কিন কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, “সময়ের খুব অভাব। যুদ্ধবিরতি টিকে আছে, কিন্তু ভঙ্গুর। জাতিসংঘের দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়াই এখন বড় পরীক্ষা।”
ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার অংশ
এই পদক্ষেপটি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপের অংশ। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে এক মাস আগে হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তিও ওই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। পরিকল্পনাটি জাতিসংঘের প্রস্তাবের সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
