শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী নারীর পিছিয়ে থাকা এবং অর্ন্তভূক্তি
নাসরিন শওকত
প্রকাশ: ১৭:১৪, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৪২, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

লেখকের ছবি
আয়শা রহমান সুইটি (ছদ্মনাম), শারীরিক প্রতিবন্ধিতার সাথে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়া এক সংগ্রামী নারী। বর্তমানে তিনি প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকারভিত্তিক একটি সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৯২ সালে দুর্ঘটনায় মেরুদণ্ডে আঘাত পেয়ে কোমর থেকে নিচের অংশ অবশ হয়ে যায় তার। দীর্ঘ পুনর্বাসনের পর তিনি আবার পড়াশোনায় ফেরেন এবং ১৯৯৪ সালে এইচএসসি-তে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় হুইলচেয়ার ব্যবহারের কারণে তাকে একের পর এক প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়তে হয়। শেষ পর্যন্ত যশোর শহিদ মশিউর রহমান কলেজ থেকে বি.কম এবং পরে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। মাস্টার্স-এ তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাতালিকায় শীর্ষ স্থান অর্জন করে প্রমাণ করেন প্রতিবন্ধকতা নয়, দৃঢ় ইচ্ছাশক্তিই বড়। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল ও পিএইচডি প্রোগ্রামে নানা বাধা তার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পথ রুদ্ধ করে দেয়, তবুও তিনি হাল ছাড়েননি।
দেশে সুইটির মতো এমন অনেক প্রতিবন্ধী নারী রয়েছেন, যারা শারীরিক প্রতিবন্ধিতার কারণে শিক্ষা জীবনের প্রায় প্রতিটি ধাপেই শিক্ষক, সহপাঠী থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের চরম অসহযোগিতা, বৈষম্যমূলক আচরণ এবং নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির শিকার হয়ে জীবনবিমুখ হয়ে পড়ছেন, সার্বিক মানবাধিকার ভোগ করার সুযোগ থেকে পড়ছেন পিছিয়ে।
দেশের প্রান্তিক ও অনগ্রসর গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যপীড়িত জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী মানুষেরা। বর্তমানে দেশে ৪৬ লাখেরও বেশি প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এ সংখ্যা খুবই নগণ্য।
নারীর ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হলো শিক্ষা। সকল নাগরিকের শিক্ষা প্রাপ্তীর বিষয়টি সাংবিধানিক অঙ্গীকার হলেও নারীরা বিশেষ করে প্রতিবন্ধী নারীরা ঐতিহাসিকভাবেই শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, নিরক্ষরতার হার অনুসারে দেশে নিরক্ষর প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ৬২.৮৯ শতাংশ। এর মধ্যে নিরক্ষর প্রতিবন্ধী পুরুষ ৫৫.০২ শতাংশ এবং নিরক্ষর প্রতিবন্ধী নারী ৭১.৯৮ শতাংশ। প্রতিবন্ধী নারীদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। অর্থাৎ মোট প্রতিবন্ধী নারীর মধ্যে ৯১ শতাংশ নারীই উচ্চশিক্ষা গ্রহণ থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
তারা পরামর্শ দেন, শিক্ষায় প্রতিবন্ধী নারীদের সম্পৃক্তকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিকে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনা করা একান্ত জরুরি। যাতে তারা মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়ে কর্মসংস্থান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া এবং সামাজিক নেতৃত্বে যুক্ত হয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) -এর ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ (এনএসপিডি) ২০২২ অনুসারে, দেশে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর মোট সংখ্যা ৪৬ লাখ ১০ হাজার, যা মোট জনসংখ্যার ২ দশমিক ৮০ শতাংশ। বিবিএস-এর শ্রমশক্তি জরিপ ২০২২ অনুযায়ী, দেশে মোট পুরুষ প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৫৩.৬২ শতাংশ এবং নারী প্রতিবন্ধীর সংখ্যা ৪৬.৩৮ (প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ) শতাংশ । এর মধ্যে গ্রামে বসবাস করে ৭৪.০২ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। অপরদিকে শহরে বাস করে ২৫.৯৮ শতাংশ। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় আড়াই কোটি বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি রয়েছেন।
দেশে প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করে উইমেন উইথ ডিজএ্যাবিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডাব্লিউডিডিএফ)। উন্নয়ন সংগঠনটির নির্বাহি পরিচালক আশরাফুন নাহার মিস্টি বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রতিবন্ধী নারীদের পূর্ণাঙ্গ অংশগ্রহণ তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে। পরিকল্পনা ও বাজেট তৈরির সময় এই প্রান্তিক নারীদের অংশগ্রহণ এবং তাদের উন্নয়নের জন্য বাজেটে নির্দিষ্ট বরাদ্দ থাকা জরুরি। তাদের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নেওয়া পদক্ষেপগুলো অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে, যাতে সেখানে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত সকল নারী যেমন-প্রতিবন্ধী নারী , ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী, আদিবাসী নারী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীরা কোন রকম বাধা ও বৈষম্য ছাড়াই অংশগ্রহণ করতে পারবে।
প্রতিবন্ধকতাসমূহ:
তবে বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় শিক্ষাক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী নারীরা বহুমাত্রিক বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ থাকলেও নিন্মোক্ত প্রতিবন্ধকতাসমূহ বাস্তব পরিস্থিতিকে আরও চ্যালেঞ্জপূর্ণ করে তুলেছে:
- সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি – নারী শিক্ষার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব, পারিবারিক অবহেলা ও সামাজিক কলঙ্ক তাদের শিক্ষার পথে বড় বাধা।
- ভৌত পরিবেশ – হুইলচেয়ারবান্ধব ভবন, র্যাম্প, লিফট, টয়লেট এবং উপযুক্ত শিক্ষাসামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় শারীরিক অবকাঠামোর অভাব।
- শিক্ষার সুযোগের অভাব – প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থার ঘাটতি ও সহায়ক প্রযুক্তির অভাব।
- আর্থিক সংকট – দরিদ্র পরিবারের জন্য শিক্ষার খরচ বহন করা কঠিন।
- বৈষম্য – শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সমাজে বৈষম্যের শিকার হওয়া।
- সচেতনতার অভাব – প্রতিবন্ধী অধিকার ও সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে অজ্ঞতা।
- একীভূত শিক্ষার দুর্বল বাস্তবায়ন – নীতিগতভাবে থাকলেও কার্যকর প্রয়োগে সমস্যা।
- যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার – সচেতনতা, নিরাপত্তা ও শিক্ষার ঘাটতি।
এই প্রতিবন্ধকতাগুলো প্রতিবন্ধী নারীদের শিক্ষায় প্রবেশ ও টিকে থাকার ক্ষেত্রে বড় অন্তরায়, যা গ্রামীণ প্রেক্ষাপটে আরও প্রকট। ফলে প্রতিবন্ধী নারীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে কর্মসংস্থান, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও সামাজিক নেতৃত্বের সুযোগ হারাচ্ছেন এবং জাতীয় উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ হয়ে পড়ছে সীমিত।
অথচ বাংলাদেশের সংবিধান প্রতিবন্ধীসহ সকল নাগরিকের সমঅধিকার, মানবসত্ত্বার মর্যাদা ও সামাজিক সাম্য নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে। প্রতিবন্ধী নারীদের অধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন, নীতি ও সনদ গুরুত্বপূর্ণ কাঠামো তৈরি করেছে। জাতিসংঘের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সনদ (UNCRPD) নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রবেশাধিকার ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যেও প্রতিবন্ধী নারীদের অন্তর্ভুক্তি গুরুত্ব পেয়েছে। “প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩” স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও আইনী সহায়তা নিশ্চিত করে। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ এবং অন্যান্য কর্মসূচিতেও তাদের অন্তর্ভুক্তি গুরুত্বসহকারে অন্তর্ভুক্ত।
এনএসপিডি ২০২১ -এর তথ্য মতে, দেশে সামগ্রিকভাবে ৪৬.৬ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি শিক্ষার সুযোগ থেকে পুরোপুরি বঞ্চিত। প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে মাত্র ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ প্রাথমিক স্তরের শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পায়, অর্থাৎ, মোট প্রতিবন্ধী শিশুর মধ্যে ৬৫.২৯ শতাংশ শিশুই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ থেকে পিছিয়ে আছে। মাধ্যমিক স্তরে ৩৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ শিশু শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ, মোট প্রতিবন্ধী শিশুর মধ্যে ৬২.৫৩ শতাংশ শিশুই মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ থেকে পিছিয়ে আছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষত প্রতিবন্ধী নারীরা সুবিধাবঞ্চিত। এক্ষেত্রে মাত্র ৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, যা প্রতিবন্ধী পুরুষদের তুলনায় অনেক কম।
ডাব্লিউডিডিএফ- দলনেতা আশরাফুন নাহার মনে করেন, প্রতিবন্ধী নারীর অন্তভূক্তিতে তার শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রতিবন্ধী নারীদের সক্ষমতা কম এমন ধারণা আমাদের সমাজে প্রচলিত অর্থাৎ তাদেরকে কোন কাজ করতে দিলে তারা তা করতে পারবেন না। এক্ষেত্রে তাদের প্রতিবন্ধিতাকে বড় করে দেখা হয়, প্রতিভাকে না। এধরনের কুসংস্কারের কারণেই প্রাথমিক অবস্থাই তারা বাদ পরে যান। এমন বাস্তবতায় যদি শিক্ষা ক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে থাকেন বা যদি কাঙ্খিত শিক্ষাজীবন শেষ করতে না পারেন, তাহলে সেই প্রতিবন্ধী মেয়েটির গ্রহণযোগত্যা চাকরির ক্ষেত্রে , পরিবার গঠনের ক্ষেত্রে বা সমাজের আর দশজনের মতো ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে নেতিবাচকপ্রভাব ফেলে।
বিবিএস -এর ২০২২ শ্রমশক্তি জরিপ বলছে, দেশে স্নাতক / অনার্স পাস করেনি এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ২.৭২ শতাংশ। স্নাতক / অনার্স পাস করেনি এমন একশ’ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে পুরুষ ৪.০৯ শতাংশ এবং নারী ১.১৫ শতাংশ। এছাড়াও মাস্টার্স ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন পাস করেনি এমন প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ০.৪৮ শতাংশ। মাস্টার্স ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন পাস করেনি এমন একশ’ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির মধ্যে পুরুষ ০.৭২ শতাংশ এবং নারী ০.১৯ শতাংশ। এছাড়াও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণে প্রতিবন্ধী নারীদের অংশগ্রহণ খুবই কম মাত্র০.১৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, দেশে প্রতিবন্ধী নারীদের মধ্যে শিক্ষার হার তুলনামূলকভাবে কম। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে যাওয়ার পথে এই নারী শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ে।
উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রতিবন্ধী নারীদের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত রাখা কেবল মানবাধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং জাতীয় উন্নয়ন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠনের পথে একটি বড় বাধা। আশরাফুন নাহার মিস্টি বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী নারীরা অনেক পিছিয়ে আছেন। প্রাথমিক শিক্ষায় ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জন, মাধ্যমিক শিক্ষায় ৯ জন এবং উচ্চশিক্ষায় মাত্র ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী নারী শিক্ষাজীবন সম্পন্ন করেন। এই উচ্চ শিক্ষিত নারীদের চাকরিতে অন্তর্ভুক্তি বড় চ্যালেঞ্জ। তাই সরকার ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইতিবাচক বৈষম্যের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা সরকারি, বেসরকারি ও করপোরেট চাকরিতে যোগ দিতে পারেন। কর্মক্ষেত্রে প্রবেশগম্যতার জন্য র্যাম্প, লিফট এবং হুইলচেয়ার চলাচলের সুবিধা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তির উচ্চতা অনুযায়ী টেবিল-চেয়ার, এবং তথ্যপ্রবাহে প্রযুক্তিগত সমন্বয় (যেমন ইনডিগো সফটওয়ার, সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ) নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি রাজনৈতিক অর্ন্তভূক্তির জন্য সংসদে সংরক্ষিত আসন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নীতি নির্ধারণী পর্যায়েও প্রতিবন্ধী নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
সুপারিশমালা:
প্রতিবন্ধী বিষয়ক গবেষকদের মতে, প্রতিবন্ধী নারীর অধিকার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা নিশ্চিত করতে সবার আগে আইন সংস্কার ও নীতিমালার কার্যকর বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এলক্ষ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ এবং সকল বিধিমালা হালনাগাদ করে প্রতিবন্ধী নারীর সুনির্দিষ্ট চাহিদা অন্তর্ভুক্ত ও কার্যকর করতে হবে। পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার, সহিংসতা প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সক্ষমতা বৃদ্ধি , জাতীয় ও স্থানীয় বাজেটে পৃথক বরাদ্দ, এবং নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলেই প্রতিবন্ধী নারীদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন ও সমাজে পূর্ণ অন্তর্ভুক্তি লাভ করা সম্ভব। তবে এই অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পরিবার ও সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগ দরকার।
লেখক: জেষ্ঠ্য সহ -সম্পাদক