মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান বাম গণতান্ত্রিক জোট ও জাসদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৫২, ১৫ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৪:০৪, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে জনগণের বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে জাতীয় কনভেনশনের আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদ।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সংগঠনটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, পাঁচ দশক ধরে নৌকা, ধানের শীষ, দাঁড়িপাল্লা, লাঙল ও সামরিক শাসনের মাধ্যমে দেশ ক্রমাগত দুঃশাসন, দুর্নীতি, বৈষম্য ও অধিকারহীনতার মধ্যে নিমজ্জিত হয়েছে। ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থনে জনগণ স্বৈরাচারের পতন ঘটালেও কাঙ্ক্ষিত গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়নি।
নেতারা দাবি করেন, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের দেড় বছরের মাথায় দেখা যাচ্ছে যে অর্জিত বিজয়ও ‘হাতছাড়া’ হওয়ার উপক্রম। তাই দেশের নৈরাজ্য, অবক্ষয় ও ক্রমবর্ধমান সংকট থেকে উত্তরণের জন্য নতুন একটি প্রগতিমুখী গণতান্ত্রিক বিকল্প সরকার প্রতিষ্ঠা অত্যাবশ্যক।
বিস্তৃত ঐক্যের ডাক
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও জাসদ জানায়, সাম্প্রদায়িক, স্বাধীনতাবিরোধী, লুটেরা ও দুর্নীতিবাজ শক্তি ব্যতীত সব প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। আদিবাসী, শ্রমজীবী জনগণ, নারী সংগঠন, পেশাজীবী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে এই রাজনৈতিক স্রোতে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
বিকল্প রাজনৈতিক শক্তির প্রস্তাবনা
সংবাদ সম্মেলনে আট দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়—
১. মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষা এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা।
২. ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে ব্যর্থ হতে না দেয়া এবং ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত খুন-গুম, লুটপাটের বিচার নিশ্চিত করা।
৩. সংসদীয় গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে সুষ্ঠু নির্বাচন ও ক্ষমতার শান্তিপূর্ণ হস্তান্তর নিশ্চিত করা।
৪. লুটপাট-দুর্নীতি-চাঁদাবাজিমুক্ত জনবান্ধব শাসন প্রতিষ্ঠা।
৫. কর্মসংস্থানভিত্তিক উন্নয়ন কৌশল, আধুনিক একমুখী শিক্ষা এবং গণমুখী স্বাস্থ্যব্যবস্থা বাস্তবায়ন।
৬. সকল প্রকার বৈষম্যহীন সমাজ-অর্থনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৭. বিদেশী শোষণ থেকে মুক্ত সমমর্যাদাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বজায় রাখা।
৮. সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলা।
২৯ নভেম্বর জাতীয় কনভেনশন
এ প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে আগামী ২৯ নভেম্বর ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা হয়েছে। সেখানে বিভিন্ন দল, সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গের মতামতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ কর্মসূচি ও রাজনৈতিক ঘোষণা প্রণয়ন করা হবে।
বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিক ও অতিথিদের ধন্যবাদ জানানো হয়।
