শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

এ বছরের সেরা রহস্যময় পাঁচটি ক্রাইম বই

রাজীব শাঁখারী

প্রকাশ: ২৩:২৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:৫৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ বছরের সেরা রহস্যময় পাঁচটি ক্রাইম বই

বই পাগল অনেক পাঠক আছেন যারা বইয়ের মধ্যে ডুবে থাকেন। যেন বই পড়াই তাদের এক ধরনের নেশা। আর নতুন কোনো গল্পর বই হলে তো কথাই নেই। তবে বইয়ের ক্ষেত্রেও পাঠকদের রুচির ভিন্নতা আছে। যেমন কারো উপন্যাস পছন্দ তো কারো ভ্রমণ, কারো কবিতার বই তো কারোর রহস্যময় বই।

যুক্তরাজ্যের ম্যাগাজিন ‘দ্য পিপল’স ফ্রেন্ড’ সম্প্রতি ২০২৫ সালের সেরা পাঁচটি রহস্যময় ক্রাইম বইয়ের তালিকা এবং গল্পের সার-সংক্ষেপ প্রকাশ করেছে। এই ৫টি খুনের রহস্যেঘেরা বই হতে পারে আপনার পছন্দের তালিকার একটি।

আসুন জেনে নেই পাঁচটি বইয়ের সার-সংক্ষেপ 
 
 গিল্টি বাই ডেফিনিশন
লেখক:
সুসি ডেন্ট
প্রকাশের তারিখ: ৩০ সেপ্টেম্বর
আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর বইটির আত্মপ্রকাশ ঘটবে। সুসি ডেন্ট গল্পের বিষয়বস্তুর দীর্ঘ বিশ্লেষণের পর বইটির নামকরণ করেন, ‘গিল্টি বাই ডেফিনিশন’। গল্পটি অক্সফোর্ডের ইংরেজি অভিধান ‘ক্ল্যারেন্ডন’-এর সিনিয়র সম্পাদক মার্থা থর্নহিলের জীবনকে ঘিরে। 

কাহিনী সংক্ষেপ 
মার্থা তার বোন চার্লির নিখোঁজের প্রায় এক দশক বিদেশে বসবাসের পর বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফিরে তার ডেস্কে বিভিন্ন কোডেড সূত্রে সাজানো রহস্যময় চিঠিগুলো দেখেন তখনই গল্পে রহস্য আসতে শুরু করে। তার দলের অন্যদের সঙ্গে নিয়ে কোডগুলো ভাঙ্গতে শুরু করেন। ব্যাপক তদন্ত এবং ঠাণ্ডা মাথায় মামলা পর্যালোচনা সত্ত্বেও, চার্লির অবস্থান এখনও অজানা। হঠাৎ তারা খেয়াল করেন যারা চার্লিকে চেনেন তাদের কাছে কোরাস স্বাক্ষরিত রহস্যময় কিছু সূত্র আসতে থাকে। আর এভাবেই গল্প এগিয়ে যেতে থাকে বছরের পর বছর প্রতারণার ভারে চাপা পড়া সত্যের দিকে।

দ্য অ্যান্টিক হান্টার্স: ডেথ অন দ্য রেড সি 
লেখক:
সি এল মিলার 
প্রকাশের তারিখ: ২৫ সেপ্টেম্বর
আজ একটি রহস্য উপন্যাস এবং ‘দ্য অ্যান্টিক হান্টার্স’ সিরিজের দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ পেয়েছে। উপন্যাসটি একজন ব্যক্তির মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনকে কেন্দ্র করে। এই উপন্যাসে, ফ্রেয়া লকউড এবং তার আন্টি ক্যারোল একটি অ্যান্টিক ক্রুজ জাহাজে চড়ে একটি হারিয়ে যাওয়া পেইন্টিং এবং একটি মৃতদেহের তদন্তের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অ্যান্টিক চোরাচালানের অন্ধকার জগতকে তুলে ধরেছে।

কাহিনী সংক্ষেপ
যখন একটি সামুদ্রিক জাদুঘর থেকে একটি পেইন্টিং চুরি হয় এবং কাছাকাছি একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়, তখন ‘লকউড অ্যান্টিক হান্টার্স এজেন্সি’ তাদের তদন্তের জন্য ফ্রেয়া লকউড এবং তার আন্টি ক্যারোলকে তলব করা হয়। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় জর্ডানের লোহিত সাগরে যাত্রা করা একটি মনোমুগ্ধকর প্রাচীন জিনিসপত্রে ভরপুর বিলাসবহুল ক্রুজ জাহাজে।

জাহাজে পৌঁছোতেই তাদের চোখে পড়ে যে জাহাজটি সামুদ্রিক জাদুঘর থেকে চুরি যাওয়া প্রাচীন জিনিসপত্রে বোঝাই। এর প্রতিটি জিনিসপত্রই ফ্রেয়ার প্রয়াত পরামর্শদাতার ডায়েরির তালিকাভুক্ত। যেখানে অমীমাংসিত অনেক মামলার বিবরণও রয়েছে। চুরি যাওয়া চিত্রকর্ম নিয়ে একজন খুনির পেছনে ধাওয়া করার সময়, তারা আরও ভয়ঙ্কর কিছু খুঁজে পায়। তারা জানতে পারে, ‘দ্য কালেক্টর’ নামের একদল বিপজ্জনক অ্যান্টিক পাচারকারীর সন্ধান। যে এই জাহাজে থাকতে পারে। এরপর তাদের অনুসন্ধান আরও গভীর এবং বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এভাবেই কাহিনী এগিয়ে যায়, অবশেষে জাহাজে ফ্রেয়া এবং ক্যারোল কি দ্য কালেক্টরের পরিচয় খুঁজে পাবে..? নাকি খুনির আক্রমণের শিকার হবে..?

আ ভেরি বুকিশ মার্ডার
লেখক:
ডি ম্যাকডোনাল্ড 
প্রকাশের তারিখ: ১৯ সেপ্টেম্বর
ডি ম্যাকডোনাল্ডের লেখা অ্যালি ম্যাককিনলে সিরিজের এটি তৃতীয় বই। এখানে গল্পটি প্রধান চরিত্র অ্যালি এবং তার বিশ্বস্ত কুকুরছানা ফ্লোরাকে নিয়ে। গল্পে অ্যালি তার গেস্টহাউসে খ্যাতনামা লেখকদের একটি রিট্রিটের পার্টি আয়োজন করেন, তখন হঠাৎ লেখককে নারীদের বাথরুমে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এ নিয়েই গল্পে চলতে থাকে রহস্যের খোঁজ এবং সমাধানের পথ।

কাহিনী সংক্ষেপ 
অ্যালি ম্যাককিনলি খবর পান যে বিখ্যাত ঔপন্যাসিক জোডি জোন্স রাস্তার ঠিক পাশের হোটেলে লেখকদের জন্য একটি রিট্রিটের আয়োজন করবেন, তখন তিনি তার ছোট্ট গেস্টহাউসে রিট্রিট আয়োজনের অফার পেয়ে বেশ আনন্দিত হন এবং জোডি জোন্সসহ কয়েকজনকে রুম অফার করেন। কিন্তু রিট্রিট শুরুর আগেই তিনি বিখ্যাত লেখক জেডিকে নারীদের বাথরুমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করতে দেখেন।

হাইল্যান্ডসের সেই ছোট্ট গেস্টহাউসে যখন অ্যালি তার অতিথিদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন তখন চুরি এবং বিশ্বাসঘাতকতার নানান অভিযোগ বাতাসে উড়তে শুরু করে। তবে রিট্রিটে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অনেকেই অ্যালির কাছে জোডির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে কি তাদের মধ্যে কেউ খুনের পথ বেছে নিয়েছেন...?

যখন অ্যালি গেস্টহাউসে জোডির ঘরে একটি ডায়েরি খুঁজে পায়, তখন সে দেখে ডায়েরির বেশ কয়েকটি পাতা ছিড়ে ফেলা হয়েছে, তখন সে মনে করে যে মামলাটির রহস্য সমাধানের খুব কাছাকাছি চলে এসেছেন। কিন্তু রহস্যটি আরও ঘনীভূত হয় যখন অপর একজন স্বনামধন্য লেখককে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই তিনি বলেছিলেন যে, জোডির হত্যাকারীর পরিচয় জানেন।

অবশেষে পারবে কি অ্যালি তার বিশ্বস্ত কুকুরছানা ফ্লোরাকে সঙ্গে নিয়ে এই রহস্যের সমাধান করতে… জানতে হলে পড়তে হবে বইটি।

মিস উইন্টার ইন দ্য লাইব্রেরি উইথ আ নাইফ
লেখক: মার্টিন এডওয়ার্ডস 
প্রকাশের তারিখ: ১১ সেপ্টেম্বর
মার্টিন এডওয়ার্ডসের লেখা বইটিতে উত্তর ইয়র্কশায়ারের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে একটি উৎসবমুখর খেলায় অংশ নিতে ছয়জন অপরিচিত ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এই ছয়জন অপরিচিত ব্যক্তির মধ্যে একটি মিল হলো তারা সবাই অপরাধমূলক লেখক। উপন্যাসে রহস্যময় মিডউইন্টার ট্রাস্ট আয়োজিত, ‘লাইফ চেইনঞ্জিং’ পুরস্কার জিততে হলে সকলকেই কোন না কোন হত্যা রহস্যের সমাধান করতে হবে।

কাহিনী সংক্ষেপ
‘মিডউইন্টার ট্রাস্ট’ এই ক্রিসমাসে অপরাধ লেখার সঙ্গে যুক্ত ছয়জন ব্যক্তিকে একটি খেলায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। চ্যালেঞ্জটি সহজ কিন্তু রহস্যময়। উত্তর ইয়র্কশায়ারের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে একজন কাল্পনিক অপরাধ লেখকের হত্যাকাণ্ডের রহস্যের সমাধান করুন এবং এমন একটি পুরস্কার জিতুন, যা আপনার ভাগ্য চিরতরে বদলে দেবে। ছায়ানিবিড় সেই গ্রামে ট্রাস্টের ছয়জন লেখকই আছেন যাতে সবাই মনোযোগের সাথে খেলতে পারেন।

হঠাৎ একটি তুষারঝড় গ্রামে প্রবেশের পথ বন্ধ করে দেয়, ঠিক তখনই ছয় অতিথিরা একে একে উধাও হতে শুরু করে। কাল্পনিক খুনের রহস্যের মধ্যে ঘটতে থাকা সত্যিকারের খুনের ঘটনা ঘটায় প্রতিযোগিতাটি আরও রহস্যময় হয়ে ওঠে। অবশেষে হঠাৎ করেই একদিন সত্যিকারের খুনি বেরিয়ে আসে এবং খুনির বেঁচে থাকার যুদ্ধ শুরু হয়।

দ্য ম্যারিগোল্ড কটেজ মার্ডার কালেক্টিভ
লেখক: জো নিকোলস 
প্রকাশের তারিখ: ১৯ আগস্ট

জো নিকোলসের লেখা ‘দ্য ম্যারিগোল্ড কটেজ মার্ডার কালেক্টিভ’ বইটি ‘দ্য থার্সডে মার্ডার ক্লাব’ অথবা ‘ওনলি মার্ডারস ইন দ্য বিল্ডিং’-এর মতোই লেখা, তবে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার এক অদ্ভুত মোড় নিয়ে লেখা, বইটি অত্যন্ত নিখুঁত পাঠ, মনোমুগ্ধকর এবং হৃদয়গ্রাহী।

কাহিনী সংক্ষেপ
‘দ্য ম্যারিগোল্ড কটেজ’-এর বাড়িওয়ালা মিসেস বি একজন একগুঁয়ে আদর্শবাদী; যিনি কেবল সেইসব লোকদেরই ভাড়া দেন যাদের তিনি ভালোবাসেন এবং যত্ন নেন। যেমন- সোফি, একজন উদ্বিগ্ন তরুণ নাট্যকার যার অতীত অন্ধকারাচ্ছন্ন; হ্যামিল্টন, একজন অ্যাগোরাফোব যে অতিরিক্ত ভাগাভাগি করতে পছন্দ করে; ওশান, একজন সমকামী ভাস্কর যিনি একা দুটি সন্তান লালন-পালন করেন; পারফেকশনিস্ট লিলি-অ্যান; এবং নিকোলাস, দুই ভাই যারা আর্থিক গোপনীয়তা বজায় রাখে।

ভাড়াটেরা সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র কয়েক মিনিট দূরে সান্তা বারবারায় বেশ শান্তিতেই বসবাস করছিল। কিন্তু এই শান্তি ভেঙে যায় যখন অ্যান্থনি, নামক একজন এবং শান্ত, স্থূলকায়, হিংস্র এক্স-কন আসে। তিন সপ্তাহ পর, শান্ত এ পাড়ার রাস্তায় একটি মৃতদেহ পাওয়া যায়। অ্যান্থনিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ভাড়াটেরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। যতক্ষণ না মিসেস বি, নিশ্চিত হন যে অ্যান্থনি নির্দোষ, তিনি থানায় আসেন এবং নিজেই অপরাধ স্বীকার করেন।

কটেজের ভাড়াটেরা একত্রিত হয়ে তাদের প্রিয় বাড়িওয়ালাকে বাঁচানোর জন্য ‘দ্য ম্যারিগোল্ড কটেজ মার্ডার কালেক্টিভ’ গঠন করে। যতই রহস্যের উন্মোচন হচ্ছে, ততই ভাড়াটেরা আরও দৃঢ় হচ্ছে... যতক্ষণ না দ্বিতীয় মৃতদেহটি পাওয়া যায়। অদ্ভুত হাস্যরস এবং সম্প্রীতিতে পরিপূর্ণ, ‘দ্য ম্যারিগোল্ড কটেজ মার্ডার কালেক্টিভ’ আপনাকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত আকৃষ্ট রাখবে।

বইগুলো অবশ্যই পড়বেন। বই আপনার আমার বিশ্বস্ত নিরব বন্ধু।

আরও পড়ুন