গাজায় প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত বাস্তুচ্যুত পরিবার, মানবিক বিপর্যয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:৪৪, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ইসরাইলি হামলা থেকে বাঁচতে যে হাজারো পরিবার গাজার বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী আশ্রয় নিয়েছিল, শীতের শুরুতেই সেই আশ্রয় এখন নতুন বিপদের মুখে। টানা ভারি বর্ষণে অনেক শিবির প্লাবিত হয়েছে, তাঁবুর ভেতর জমেছে পানি, ভিজে গেছে শুকনো কাপড়, বিছানা-চাদর ও সামান্য খাদ্যসামগ্রী। ফলে বেঁচে থাকার লড়াই আরও কঠোর হয়ে উঠছে।
শুক্রবার আল জাজিরার রিপোর্টে বলা হয়, গাজার বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর তাঁবু বৃষ্টিতে তলিয়ে যাওয়ায় শিশু-নারীসহ সবাই অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। জাতিসংঘও সতর্ক করেছে—ইসরাইলের আরোপিত সহায়তা নিষেধাজ্ঞা শিথিল না হলে শীতে মানবিক বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।
উত্তর গাজার বাসিন্দা আবদুর রহমান আসালিয়া জানান, “বৃষ্টিতে আমাদের সব কাপড় ভিজে গেছে, বিছানাপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা নতুন তাঁবুর জন্য আবেদন করছি—কমপক্ষে শীতের ঠাণ্ডা থেকে যেন রক্ষা পাওয়া যায়।”
তিনি আরও জানান, প্রায় দুই ডজন মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি সরানোর চেষ্টা করলেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না।
গাজার সিভিল ডিফেন্স জানায়, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উত্তরাঞ্চলে, যেখানে গত মাসে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধবিরতির পর বহু পরিবার ফিরে এসেছিল। একইসঙ্গে মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহতেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে—“ইসরাইলের দুই বছরের যুদ্ধ গাজার ঘরবাড়িকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। দ্রুত আন্তর্জাতিক সহায়তা না পেলে তাঁবু, কারাভ্যান বা ঘর—কিছুই সময়মতো পৌঁছানো সম্ভব হবে না।”
এক যৌথ বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিশর, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, পাকিস্তান ও তুর্কি নিরাপত্তা পরিষদকে আহ্বান জানিয়েছে—মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা দ্রুত অনুমোদন করতে হবে। এসব দেশ মনে করে, পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন মানবিক বিপর্যয় প্রশমনে সহায়ক হবে।
একইসঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী সপ্তাহে যে প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবে—তার মাধ্যমে প্রায় ৩ হাজার ফিলিস্তিনি পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষণ দিয়ে গাজায় পুনঃমোতায়েন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পরে পুরো ১৩ হাজার সদস্যের বাহিনীকে প্রশিক্ষণের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ইইউর নথিতে বলা হয়েছে—গাজার নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠনে এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
