‘এপস্টিন ফাইল’ ভোট এড়ানো আর সম্ভব নয়—হাউজে কৌশল বদল জনসনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৫৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
ওয়াশিংটন ডিসিতে ১২ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে হাউস স্পিকার মাইক জনসন। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে জেফরি এপস্টিন–সংশ্লিষ্ট সব ফাইল প্রকাশের উদ্যোগ এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে এটি থামানো আর সম্ভব নয়—এমনটাই মনে করছেন মার্কিন হাউজ স্পিকার মাইক জনসন। শুরুতে বিলটি ঠেকাতে সময় নষ্ট করা হলেও, শেষ পর্যন্ত জনসন দ্রুত ভোটের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
রিপাবলিকান দলে ব্যাপক সংখ্যক সদস্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান না মেনে বিলের পক্ষে ভোট দেবেন—এই বাস্তবতা সামনে আসতেই কৌশল পরিবর্তন করেন তিনি।
হাউজ রিপাবলিকান নেতৃত্বের এক জ্যেষ্ঠ সদস্য সিএনএনকে জানান—‘এখন আর অপেক্ষা করে লাভ নেই।’ কারণ দলটির অনেক সদস্য ট্রাম্পের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে এপস্টিন ফাইল প্রকাশের পক্ষে দাঁড়াতে প্রস্তুত। প্রতিনিধি পরিষদের দুই সদস্য—রিপাবলিকান টমাস ম্যাসি ও ডেমোক্র্যাট রো খান্না—দ্বিদলীয় এই প্রস্তাবে ২১৮টি স্বাক্ষর তুলতেই বিলটি থামানোর পথ কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
এখন লক্ষ্য হচ্ছে—দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা (২৯০ ভোট) পাওয়া, যাতে ট্রাম্প ভেটো দিলেও আইন পাস হয়ে যায়। ম্যাসি সিএনএনকে বলেন, ‘যদি আমরা দুই-তৃতীয়াংশ নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে সেনেটের ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি হবে।’
হোয়াইট হাউসের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান—স্পিকার জনসন ভোট দ্রুত করার সিদ্ধান্ত নেবেন—এ কথা আগেই ট্রাম্পকে জানানো হয়েছিল। তিনি নাকি বুঝতে পেরেছেন যে পুরো পরিস্থিতি এখন ‘অনিবার্য বাস্তবতায়’ পৌঁছেছে।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ সহযোগীরাও শেষ মুহূর্তে কয়েকজন রিপাবলিকান সদস্যকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যেন তারা বিলটির পক্ষে না দাঁড়ান। কিন্তু তা সফল হয়নি।
হাউজ রিপাবলিকানদের আরেক সিনিয়র আইনপ্রণেতা বলেন—‘যখন থামানো যাবে না, তখন দ্রুত ভোট করাই ভালো। যাতে পুরো চাপটা পরে সেনেটের ওপর।’
ম্যাসি–খান্নার বিল মূলত বিচার বিভাগকে নির্দেশ দিতে চায়—জেফরি এপস্টিন কেস–সংক্রান্ত সব নথি প্রকাশ করতে। হাউজ ওভারসাইট কমিটি ইতিমধ্যে কয়েক হাজার পৃষ্ঠা প্রকাশ করেছে, কিন্তু দাবি হলো—সব ফাইল প্রকাশ করতে হবে।
হঠাৎ ভোট দ্রুত করার সিদ্ধান্ত আসে ঠিক সেই দিনই, যেদিন ওভারসাইট কমিটি নতুন হাজার হাজার ইমেইল প্রকাশ করে। একই দিনে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা রিপাবলিকান লরেন বোবার্টের সঙ্গেও বৈঠক করেন—বিলটি ঠেকানোর শেষ চেষ্টা হিসেবে।
ডেমোক্র্যাট রো খান্না মন্তব্য করেন—‘যদি শোভাযাত্রা থামানো না যায়, তাহলে বরং সামনে হাঁটাই ভালো।’
হাউজে বিলটি পাস হওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু মার্কিন সেনেটে এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা জন থুন আগে বলেছেন—ডিওজে ইতিমধ্যে হাজার হাজার পৃষ্ঠা প্রকাশ করেছে, তাই নতুন আইন প্রয়োজন নেই বলে তার মত।
তবু হাউজে দুই-তৃতীয়াংশ ভোট হলে সিনেটের ওপর ব্যাপক জনচাপ তৈরি হবে—ঠিক এটিই ম্যাসি ও খান্নার কৌশল।
