ভেনেজুয়েলায় সামরিক অভিযান
ট্রাম্পকে গোপন পরিকল্পনার বিস্তারিত ব্রিফ করল নিরাপত্তা কর্মকর্তারা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:০৯, ১৪ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:১৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো।ছবি: গেটি ইমেজ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভেনেজুয়েলায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের বিষয়ে গত সপ্তাহেই বিশদভাবে ব্রিফ করেছেন মার্কিন নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা–শীর্ষ কর্মকর্তারা।
সিএনএন–এর গোয়েন্দা ও প্রশাসনিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে—ট্রাম্পের সামনে ‘সাউদার্ন স্পিয়ার’ নামে বিশেষ সামরিক পরিকল্পনার হালনাগাদ খসড়া উপস্থাপন করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে মাদক রুট, সামরিক স্থাপনা ও রাজনৈতিক টার্গেটে আঘাত হানা।
সূত্রগুলো বলছে, ব্রিফিংয়ে ট্রাম্পকে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানানো হয়েছে—সম্ভাব্য সামরিক অভিযান কতভাবে চালানো যেতে পারে, ঝুঁকি ও ব্যর্থতার সম্ভাবনা, মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি, রাজনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক পরিণতি।
এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি ট্রাম্প। সম্ভাব্য লাভ–ক্ষতি, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভেতর রাজনৈতিক চাপ—সব মিলিয়ে তিনি ধীর পদক্ষেপে এগোচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ড (সাউথকম) ভেনেজুয়েলার ভেতরে কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকাকে সম্ভাব্য অভিযানস্থল হিসেবে চিহ্নিত করে পরিকল্পনা সেল চালু করেছে।
মাদক উৎপাদন কেন্দ্র, কোকেন পাচারের রুট, সরকার–নিয়ন্ত্রিত সামরিক স্থাপনা, রাজনৈতিক নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে অপারেশনের সম্ভাবনা।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ও জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ চেয়ার জেনারেল ড্যান কেইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য ট্রাম্পের সামনে তুলে ধরেন।
হেগসেথ এক্স প্ল্যাটফর্মে ঘোষণা দিয়েছেন—সাউদার্ন স্পিয়ার মার্কিন ভূখণ্ডকে ‘মাদক সন্ত্রাস’ থেকে সুরক্ষিত করবে এবং পশ্চিম গোলার্ধে মার্কিন প্রভাব পুনরায় জোরদার করবে।
কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র উল্লেখযোগ্য মাত্রায় নৌ ও বিমান শক্তি মোতায়েন করেছে ক্যারিবীয় অঞ্চলে। সর্বশেষ বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থান নিয়েছে, যা পরিস্থিতির গুরুতর দিক নির্দেশ করছে।
অন্যদিকে, নিকোলা মাদুরোর সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য হামলা ঠেকাতে বিশাল সেনা সমাবেশ ও সীমান্ত জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে। ভেনেজুয়েলা বলছে, বিদেশি আগ্রাসন হলে দেশ ‘গেরিলা যুদ্ধেও প্রস্তুত’।
যদিও ব্রিফিং জোরদার হয়েছে, তবে ট্রাম্প সিবিএস–এর ‘৬০ মিনিটস’–এ বলেছেন, তিনি এ মুহূর্তে হামলা বিবেচনা করছেন না।
তবে কর্মকর্তারা বলছেন—পরিকল্পনা প্রস্তুত থাকলেও আইনি ভিত্তি দুর্বল, কারণ ভেনেজুেলার ভেতরে স্থল লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর অনুমতি দিতে মতো আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামো যুক্তরাষ্ট্রের হাতে নেই।
সূত্রমতে, সামরিক পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে তার কূটনৈতিক মূল্য হবে ভয়াবহ—এ কারণেই সিদ্ধান্ত নিতে সময় নিচ্ছেন ট্রাম্প।
