শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

| ১১ আশ্বিন ১৪৩২

উত্তম কুমার : জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি মহানায়ক

সমাজকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০০:৫৩, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

উত্তম কুমার : জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি মহানায়ক

আজ ৩ সেপ্টেম্বর বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তী উত্তম কুমারের জন্মদিন। তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মহানায়ক’। মঞ্চে মনকাড়া অভিনয়, বাংলা চলচ্চিত্রকে নতুন দিক দেয়। মঞ্চ থেকে উত্তম কুমার হয়ে ওঠেন বাঙালির ঘরের মানুষ।

উত্তম কুমার শুধু নায়ক নন, ছিলেন একাধারে প্রযোজক, কখনও সংগীতপ্রেমী, এমনকি কিছু গানে কণ্ঠও দিয়েছেন। অভিনয়ে অসাধারণ সাবলীলতা, চেহারায় সৌন্দর্য ও কণ্ঠে সম্মোহনী শক্তি— এই ত্রিভুজ দিয়েই তিনি জয় করে নেন সব শ্রেণির দর্শককে।
   
জন্ম ও শুরু: 
উত্তম কুমারের আসল নাম অরুণকুমার চট্টোপাধ্যায়। ১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার একটি সাধারণ পরিবারে জন্ম। ছোটবেলা থেকেই সংস্কৃতিমনা পরিবেশে বড় হওয়া এই ছেলেটি কখনও ভাবেননি, তিনি একদিন বাংলা সিনেমার ইতিহাস হয়ে উঠবেন।

কর্মজীবনের শুরুতে বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে। একের পর এক সিনেমা ফ্লপ হয়েছে, এমনকি ‘ফ্লপ মাস্টার জেনারেল’ বলেও কটাক্ষ শুনতে হয়েছে। কিন্তু থেমে যাননি। এরপর আসে সেই পরিবর্তনের মুহূর্ত—"অগ্নিপরীক্ষা" (১৯৫৪), যা বাংলা সিনেমায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।

সুচিত্রা-উত্তম: বাংলা রোম্যান্সের সংজ্ঞা:

বাংলা সিনেমায় সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কালজয়ী জুটি বলতে গেলে সুচিত্রা সেন ও উত্তম কুমার—যাঁদের একসঙ্গে নাম না বললে একধরনের অসম্পূর্ণতা থেকে যায়। "সাগরিকা", "হারানো সুর", "সাত পাকে বাঁধা", "চাওয়া পাওয়া", "স্বরলিপি"—এই সিনেমাগুলো শুধু রূপালী পর্দায় নয়, দর্শকের হৃদয়ে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে।


সত্যজিৎ রায়ের "নায়ক"— সেই কালজয়ী ছাপ

১৯৬৬ সালে সত্যজিৎ রায়ের "নায়ক" সিনেমাটি উত্তম কুমারকে নিয়ে তৈরি হয়। সিনেমাটি শুধুই একটি চরিত্র নয়, বরং উত্তম কুমারের নিজস্ব জীবনের প্রতিবিম্ব বলে মনে করেন অনেকে। "নায়ক"-এ অরিন্দম চট্টোপাধ্যায়ের চরিত্রে তিনি যে অভিনয় করেছেন, তা আজও ফিল্ম স্কুলে পাঠ্য।

বিদায়, কিন্তু অমরত্বে প্রতিষ্ঠা:

১৯৮০ সালের ২৪ জুলাই, মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান উত্তম কুমার। তবে তাঁকে কে বলবে প্রয়াত? বাংলা সিনেমা যতদিন থাকবে, ততদিন থাকবে উত্তম কুমারের অস্তিত্ব—গানে, সংলাপে, ক্লাসিক দৃশ্য আর দর্শকের ভালোবাসায়।

উপসংহার:

আজ উত্তম কুমারের জন্মদিনে অসীম শ্রদ্ধা জানাই তাঁকে, যিনি আমাদের হাসতে শিখিয়েছেন, কাঁদতে শিখিয়েছেন, প্রেম করতে শিখিয়েছেন—এমনকি পরিপূর্ণতা কীভাবে জীবনের অংশ হতে পারে, তাও দেখিয়েছেন। মহানায়কের জন্মদিনে নতুন প্রজন্মকে আমরা শুধু এটাই বলি—উত্তম কুমারকে জানো, বোঝো, দেখো। কারণ ইতিহাস জানলে ভবিষ্যতের পথ আরও আলোকিত হয়।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন