বুকার পুরস্কার জিতলেন হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সা-লাই
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:১৬, ১১ নভেম্বর ২০২৫
বুকার পুরস্কার জিতলেন হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সা-লাই। ছবি: এপি নিউজ
লন্ডনের ওল্ড বিলিংসগেট হলে আয়োজিত জমকালো অনুষ্ঠানে ২০২৫ সালের মর্যাদাপূর্ণ বুকার পুরস্কার জিতে নিলেন হাঙ্গেরীয়-ব্রিটিশ লেখক ডেভিড সা–লাই। তার উপন্যাস ‘ফ্লেশ’—এর জন্য তিনি এই সম্মান অর্জন করেন। উপন্যাসটিতে তুলে ধরা হয়েছে এক হাঙ্গেরিপ্রবাসীর জীবনের ঘাত–প্রতিঘাত, সংগ্রাম, ভালোবাসা ও বেদনাবোধের এক মানবিক কাহিনি।
সা–লাই (৫১) ফাইনাল শর্টলিস্টে থাকা পাঁচজন লেখককে পেছনে ফেলে পুরস্কারটি জেতেন। পুরস্কারের অর্থমূল্য ৫০ হাজার ব্রিটিশ পাউন্ড (প্রায় ৬৫ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার)। চূড়ান্ত তালিকায় ছিলেন ভারতীয় লেখক কিরণ দেশাই এবং ব্রিটিশ লেখক অ্যান্ড্রু মিলারও।
‘ফ্লেশ’ উপন্যাসে ইস্তভান নামের এক অন্তর্মুখী তরুণের জীবনের বাঁকবদল তুলে ধরেছেন লেখক—কিশোর বয়সের নিষিদ্ধ প্রেম থেকে শুরু করে যুক্তরাজ্যে অভিবাসী হিসেবে তাঁর সংগ্রাম, আর শেষে সমাজের উচ্চবিত্ত শ্রেণিতে পৌঁছানোর যাত্রা।
বিচারকমণ্ডলী এক বিবৃতিতে বলেন, “ফ্লেশ শ্রেণি, ক্ষমতা, অন্তরঙ্গতা, অভিবাসন ও পুরুষত্ব নিয়ে গভীর চিন্তাশীল রচনা। একজন মানুষের জীবনযাত্রার অন্তর্গত যেসব অভিজ্ঞতা তাঁর অস্তিত্বকে গড়ে তোলে, এই বই সেগুলোকেই গভীরভাবে অন্বেষণ করেছে।”
পুরস্কার হাতে পেয়ে সা–লাই বলেন, “আমি চেয়েছিলাম এমন একটি উপন্যাস লিখতে, যা ঝুঁকিপূর্ণ অথচ সৎ। বিচারকমণ্ডলী সেই প্রচেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন—এটাই আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।”
আয়ারল্যান্ডের লেখক ও বিচারক রডি ডয়েল বলেন, “আমি আগে কখনও এমন উপন্যাস পড়িনি, যেখানে পৃষ্ঠার সাদা জায়গা এত সুচারুভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। লেখক যেন পাঠককে নিজের মতো করে চরিত্রটি গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছেন।”
বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন ডয়েল ও ‘সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি’ অভিনেত্রী সারাহ জেসিকা পার্কার। মোট ১৫৩টি উপন্যাসের মধ্য থেকে ‘ফ্লেশ’কে বেছে নেওয়া হয়।
কানাডায় জন্ম নেওয়া, যুক্তরাজ্যে বেড়ে ওঠা এবং বর্তমানে ভিয়েনায় বসবাসরত সা–লাই ২০১৬ সালে ‘অল দ্যাট ম্যান ইজ’ উপন্যাসের জন্য বুকার ফাইনালিস্ট হয়েছিলেন। ‘ফ্লেশ’ তার ষষ্ঠ উপন্যাস।
বিবিসি রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার বাবা হাঙ্গেরীয় হলেও আমি কখনও হাঙ্গেরিতে পুরোপুরি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করিনি।
একইভাবে লন্ডনেও নিজেকে এক প্রকার বহিরাগত বলেই অনুভব করেছি।”১৯৬৯ সালে সূচিত বুকার পুরস্কার সাহিত্যজগতের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি, যা লেখকের ক্যারিয়ারে এক মোড় ঘুরিয়ে দেয়। পূর্বে এই পুরস্কার পেয়েছেন সালমান রুশদি, অরুন্ধতি রায়, মার্গারেট অ্যাটউডসহ অনেক বিশ্বখ্যাত লেখক।
২০২৪ সালে মহাকাশ স্টেশন বিষয়ক উপন্যাস ‘অরবিটাল’–এর জন্য পুরস্কার পেয়েছিলেন সামান্থা হার্ভে। আর চলতি বছরের মে মাসে আন্তর্জাতিক বিভাগে ভারতীয় লেখক বানু মুস্তাক তাঁর ‘হার্ট ল্যাম্প’–এর জন্য পুরস্কৃত হন।
