মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

| ১৯ কার্তিক ১৪৩২

৩ নভেম্বর ২০২২ সালে আমার এই লেখা : সোহেল তাজ

প্রকাশ: ১৬:০০, ৩ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৬:০৪, ৩ নভেম্বর ২০২৫

৩ নভেম্বর ২০২২ সালে আমার এই লেখা : সোহেল তাজ

আজ থেকে ঠিক ৪৭ বছর আগে এই দিনে একটি পাঁচ বছর বয়েসের ছোট্ট ছেলে হারাল তার প্রিয় বাবাকে। যার হাত ধরে সে যেত বাড়ির পাশে আবাহনির মাঠে। যার হাত ধরে ধানমণ্ডির সাতমাসজিদ রোডের  রাস্তা দিয়ে হেটে হেটে খুঁজে পেয়েছিল তার প্রথম স্কুল। টেলিভিশনের পর্দায়  বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আর জাতীয় পতাকা পরিবেশিত হলে যিনি সব সময় মনে করিয়ে দিতেন দাড়িয়ে স্যালুট করে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে। যিনি কোমল ভাবে বোঝাবার চেষ্টা করতেন মুক্তিযুদ্ধে লাখো মানুষের আত্মত্যাগের কথা। যিনি এই ছোট্ট ছেলেটিকে একটি আত্মবিশ্বাসী দায়িত্বশীল মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করার গুরুত্ব শেখাবার চেষ্টা করেছিলেন এবং অনুপ্রেরণা যোগানোর চেষ্টা করেছিলেন নানা কায়দায়।

এ ছেলেটির জীবনটা হঠাৎ করে পাল্টে গেলো একদিন। ছেলেটি দেখতে পেল একটি লাশ, তার বাবার লাশ। লাশটি রাখা হল একটি রুমে আর সেই লাশ দেখতে আসলো হাজার হাজার মানুষ। সেও অবাক হয়ে দেখতে  লাগল সবার সাথে। পরে সেও গেল বনানি কবরস্তানে। সেখানে সবাই তাকে প্রথমে মাটি দিতে বলল- সেও  দিল। তার কাছে মনে হচ্ছে এটা যেন একটি স্বপ্ন এবং এই স্বপ্নের মধ্যে দিয়ে সে ভেসে যাচ্ছে।

আস্তে আস্তে সময় পার হতে লাগলো আর সেই স্বপ্নের আবরণ ধীরে ধীরে কেটে যেতে লাগলো। তারপর থেকে তার মনে খালি প্রশ্ন আর প্রশ্ন। তার কেন বাবা নেই? অন্য সবার তো বাবা আছে। আরও সময় পার হল কিন্তু প্রশ্ন গুলো আরও জটিল হতে লাগলো। কেন মেরে ফেলা হল তার প্রিয় বাবাকে? উনি কি অন্যায় করেছিলেন? ওনাকে জেলে কেন রাখা হয়েছিল? আর জেলখানায় মেরে ফেললো কারা এবং কেন? এই প্রশ্ন গুলো যখন তার মাথায় ঘুর পাক খাচ্ছে তখন সে তার মাকে বলতে শুনত, “আমি আমার স্বামী হারিয়েছি আর আমার  সন্তানরা  তাদের বাবাকে হারিয়েছে, কিন্তু দেশ কি হারাল? আমাদের ক্ষতি থেকে দেশের আরও মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গেল।“            

তারপর ৪৭ বছর পার হয়ে গেল। ছোটবেলার সেই দুখ, কষ্ট আর যন্ত্রণা নিয়েই বছর গুলো পার করল। সে বুঝতে পারল যে তার সত্ত্বা তার সেই হারানো বাবার মাঝেই লুকিয়ে আছে।  

আজ ৩রা নভেম্বর ২০২২ । আজ ধেকে ৪৭ বছর আগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিলে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী জাতীয় চার নে্তা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সারকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, অর্থমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এম মুনসুর আলি, খাদ্য ও ত্রানমন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান। 

বাংলাদেশ তার সত্ত্বা খুঁজে পাবে তখনই যখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সহ সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন (অব.) এম মুনসুর আলি, এ এইচ এম কামারুজ্জামানদের মত সকল নেতাদের আত্মত্যাগ, অবদান আমরা সঠিক এবং পৃথক ভাবে মূল্যায়ন করতে পারব। তাদের আত্মত্যাগ ও আত্মদান খুলে দিক  ইতিহাসের সেই জানালা যার গভীরে ঢুকে এই জাতি খুঁজে পাবে তার সত্ত্বা।

সূত্র : সোহেল তাজের ফেসবুক থেকে

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

জেলে থাকা আসামিরাও ভোট দেবেন, জানালেন সিইসি
ঢাকা-১৭ আসনে হিরো আলম হবেন আন্দালিব রহমানের প্রতিদ্বন্দ্বী
প্রথমবার ভোটাধিকার পাচ্ছেন প্রবাসীরা: সিইসি
নতুন রূপে শাহরুখ, প্রকাশ্যে এল ‘কিং’ এর টিজার
জিয়ার সমাধিতে ড্যাবের শ্রদ্ধাঞ্জলি
রাজনৈতিক দলগুলোই নির্ধারণ করবে গণভোটের সময়
সত্তর বছরে পিতৃত্বের স্বাদ পেলেন কেলসি গ্রামার
বাগদান সারলেন আল্লু সিরিশ
রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান সরকারের
আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত ৭, আহত দেড় শতাধিক
সুন্দরবনের দুবলার চরে শুরু হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব
আকর্ষণীয় বেতনে সিনিয়র অফিসার নেবে ওয়ান ব্যাংক
মোহাম্মদপুরে ডেকে নিয়ে হত্যাকাণ্ড, পুলিশের দাবি গণপিটুনি, স্থানীয়দের ভিন্নমত
যুদ্ধবিরতির পর ১৯৪ বার চুক্তি ভঙ্গ: গাজায় মানবিক বিপর্যয়
ভিয়েতনামে বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬
খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১ আহত ২
ফের পাবনা-ঢাকা রুটে বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তিতে যাত্রীরা