যুদ্ধবিরতির পর ১৯৪ বার চুক্তি ভঙ্গ: গাজায় মানবিক বিপর্যয়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:০৪, ৩ নভেম্বর ২০২৫
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে অন্তত ১৯৪ বার সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
ফিলিস্তিনের সরকারি মিডিয়া অফিসের পরিচালক ইসমাইল আল-থাওয়াবতেহ রবিবার (২ নভেম্বর) তুরস্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।
থাওয়াবতেহ জানান, এসব লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে—
তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করে গাজা উপত্যকার ভেতরে সামরিক অনুপ্রবেশ, নির্বিচারে গুলি ও গোলাবর্ষণ,আবাসিক এলাকায় বিমান হামলা,
মানবিক সহায়তা, চিকিৎসা সামগ্রী, তাঁবু ও মোবাইল হোম প্রবেশে বাধা এবং অবকাঠামো ধ্বংসযজ্ঞ।
তিনি বলেন, “চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর থেকে দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ১৯৪টি বার এটি লঙ্ঘন করেছে। আমরা আশা করেছিলাম এই যুদ্ধবিরতি কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে, কিন্তু তা হয়নি।”
ফিলিস্তিনি মিডিয়া অফিস জানায়, যুদ্ধবিরতি প্রোটোকল অনুযায়ী ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মৃতদেহ উদ্ধারে শত শত ভারি যন্ত্রপাতি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু বাস্তবে ইসরায়েল কেবল নিজেদের বন্দিদের লাশ উদ্ধারের জন্য সীমিত কিছু যন্ত্রপাতি ঢুকতে দিয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যমের উদ্ধৃতি দিয়ে সংস্থাটি জানায়, ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো প্রায় ৯,৫০০ ফিলিস্তিনি নিখোঁজ বা নিহত অবস্থায় পড়ে আছেন।
এছাড়া বাস্তুচ্যুত পরিবারের জন্য তিন লাখের বেশি তাঁবু ও মোবাইল হোম সরবরাহের প্রতিশ্রুতি থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
ফলে প্রায় ২ লাখ ৮৮ হাজার পরিবার এখন রাস্তায় বা উন্মুক্ত স্থানে বসবাস করছে।
গাজা সরকারের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতির পরও অব্যাহত হামলায় ভূখণ্ডের প্রায় ৯০ শতাংশ বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে, যার আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে প্রাথমিকভাবে ৭০ বিলিয়ন ডলার।
থাওয়াবতেহ অভিযোগ করেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে মানবিক সংকটকে আরও তীব্র করছে এবং রাফাহ সীমান্তে মিশরের দিকে ছয় হাজারের বেশি ত্রাণবাহী ট্রাক আটকে রেখেছে।
তিনি আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানান, যুদ্ধবিরতি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে এবং গাজার মানুষের নিরাপত্তা ও ত্রাণ প্রবেশের ব্যবস্থা করতে।
