ভেনেজুয়েলার চারপাশে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক প্রস্তুতি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:১৪, ৩ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৫:৫৬, ৩ নভেম্বর ২০২৫
ভেনেজুয়েলার উপকূল ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সামরিক তৎপরতা নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে পেন্টাগন সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে—রয়টার্সের ভিজ্যুয়াল তদন্তে এমন চিত্রই উঠে এসেছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে, লাতিন আমেরিকার এ অঞ্চলে আরেকটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে শীতলযুদ্ধকালের পর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা রুজভেল্ট রোডস নৌঘাঁটি পুনর্গঠন করছে। স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে সেখানে ট্যাক্সিওয়ে পরিষ্কার ও রানওয়ে পেভিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ঘাঁটিটি মূলত দীর্ঘমেয়াদি অভিযান পরিচালনার জন্য কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২০০৪ সালে নৌবাহিনী ঘাঁটি ছেড়ে যাওয়ার আগে এটি ছিল বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ মার্কিন সামরিক স্থাপনা। এখন সেটিকে পুনরায় সক্রিয় করার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র পুয়ের্তো রিকো ও ইউএস ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জের বিমানবন্দরগুলোকেও আধুনিকায়ন করছে—যেমন রাফায়েল হার্নান্দেজ এয়ারপোর্ট ও সেন্ট ক্রক্স। দুটি স্থানের দূরত্ব ভেনেজুয়েলা থেকে মাত্র ৫০০ মাইল।
রয়টার্স তিনজন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ও তিনজন সামুদ্রিক বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলে এবং গত দুই মাসে স্যাটেলাইট ছবি, জাহাজ ও ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডেটা, সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ১৪টি অভিযানে অংশ নিয়েছে—যেগুলো মূলত “ড্রাগ কার্টেল মোকাবেলা”র নামে পরিচালিত হলেও তাতে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার সঙ্গে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আন্না কেলি রয়টার্সকে বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তাঁর দাবি, এসব পদক্ষেপ “যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রাণরক্ষার” জন্যই প্রয়োজনীয়।
তবে বিশ্লেষকদের মতে, রুজভেল্ট রোডস ঘাঁটির ট্যাক্সিওয়ে সংস্কার, নতুন টেন্ট স্থাপন, মোবাইল এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার ও গোলাবারুদ সংরক্ষণাগার নির্মাণ—এসব ইঙ্গিত দিচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ প্রস্তুতির। অক্টোবরের শেষ দিকের স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, রানওয়ের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ২০টি নতুন টেন্ট স্থাপন করা হয়েছে।
এমন অবস্থায় লাতিন আমেরিকার দেশগুলো পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। ভেনেজুয়েলা সরকার এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “যেকোনো সময় আঘাত হানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।”
