ডাকাত–অপহরণ আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা স্থানীয়দের
উখিয়া–টেকনাফ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৩:২৪, ১৫ নভেম্বর ২০২৫
ছবি : সমাজকাল
কক্সবাজারের টেকনাফে পাহাড়ি ডাকাতদের তৎপরতা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালী, চৌকিদারপাড়া ও পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি এলাকায় প্রতিনিয়ত অপহরণ, গুলি বর্ষণ ও বাড়িঘরে হামলার চেষ্টা চলায় সৃষ্টি হয়েছে চরম নিরাপত্তাহীনতা। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, রাত নামতেই শতাধিক পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপত্তার জন্য মসজিদের বারান্দায় কিংবা খোলা জায়গায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, পাহাড়সংলগ্ন গ্রাম হওয়ায় ডাকাত দলের সুবিধাভোগী এলাকা হয়ে উঠেছে বাহারছড়া। রাত নামলেই ২০–৩০ জনের ডাকাত বাহিনী গ্রামে ঢুকে পড়ে; কখনো অপহরণ, কখনো লুটপাটের চেষ্টা চালায়। মূল্যবান জিনিস না পেলে পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে।
চৌকিদারপাড়ার বাসিন্দা নুরে আলম বলেন,“শতাধিক পরিবার প্রতিদিন আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছে। সন্ধ্যা নামলেই আমরা মসজিদের উঠানে আশ্রয় নেই। শিশু–বৃদ্ধদের খোলা জায়গায় রাত কাটাতে হয়।”
শীলখালীর লিয়াকত আলী বলেন,“দুই রাত আগে ২০–৩০ জনের একটি ডাকাত দল গ্রামে ঢোকে। আমাদের প্রতিরোধে তারা পালিয়ে যায়। প্রতিরাত আতঙ্ক নিয়েই থাকতে হচ্ছে।”
জুবায়ের ইসলাম জুয়েল জানান,“আমরা যুবকরা টানা কয়েক রাত পাহারা দিচ্ছি। যে কোনো মুহূর্তে প্রতিরোধে নামতে প্রস্তুত।”
মাগরিবের পর শীলখালী এলাকার শিশু ইমরান খান নয়নকে প্রায় ১০–১৫ জন ডাকাত অপহরণ করে নিয়ে যায়। পাঁচ ঘণ্টা পাহাড়ে আটকে রাখার পর গ্রামবাসীর চাপের মুখে তাকে ছেড়ে দেয়।
শামলাপুরের শহীদ উল্লাহ বলেন,“ডাকাত আতঙ্কের কারণে ঘরে থাকা যায় না। প্রতিদিন মসজিদের বারান্দায় রাত কাটাতে হচ্ছে। দ্রুত শক্ত পদক্ষেপ চাই।”
উখিয়া–টেকনাফ আসনের এমপি প্রার্থী ও জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন,“বাহারছড়ার আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস জানান,“শীলখালীর ঘটনাস্থলে দ্রুত অভিযান চালালে ডাকাত দল পালিয়ে যায়। ডাকাত–অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।”
স্থানীয়দের দাবি-পাহাড়ি ডাকাতদের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান, পাহাড়সংলগ্ন এলাকার টহল কার্যক্রম বৃদ্ধি, অপহরণ প্রতিরোধে স্থায়ী পুলিশ চৌকি স্থাপন।
