গাজায় এক সেনা হত্যার জেরে ১০৪ ফিলিস্তিনিকে হত্যা ইসরায়েলের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪:৪২, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:৫৯, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
গাজায় এক ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর দখলদার ইসরায়েল ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় অন্তত ১০৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৪৬ শিশু ও ২০ নারী রয়েছেন। খবর দিয়েছে রয়টার্স।
বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতভর এই হামলা চালানো হয় গাজার উত্তরাঞ্চলের বেইত লাহিয়া এলাকায়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা সেখানে এক ‘অস্ত্রভাণ্ডার’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছে, ওই এলাকায় মূলত আবাসিক ভবন ছিল, যেগুলোর ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনও মরদেহ উদ্ধার চলছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় দুই বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে গত ১০ অক্টোবর কার্যকর হয় যুদ্ধবিরতি। কিন্তু মাত্র তিন সপ্তাহ পরই নতুন করে এই সহিংসতা পরিস্থিতিকে ভয়াবহ করে তুলেছে।
ইসরায়েলের অভিযোগ, মঙ্গলবার ‘ইয়েলো লাইন’-এর ভেতরে হামাস সদস্যরা তাদের এক সেনাকে হত্যা করে। হামাস এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ইসরাইল জানায়, ওই ঘটনার জবাবেই এই বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমরা যে লক্ষ্য নিয়েছি—গাজা থেকে হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং অঞ্চলটিকে সামরিকভাবে নিরপেক্ষ রাখা—তা আমরা নিশ্চিত করব।
গাজার নুসেইরাত এলাকায় এক হামলায় পুরো আবু দালাল পরিবার নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। ধ্বংসস্তূপ থেকে লাশ উদ্ধার শেষে এলাকাজুড়ে শোক মিছিল বের করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টার হামলায় নিহতদের মধ্যে ২৪ জন হামাস সদস্য ও বাকিরা বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীও রয়েছে।
ইসরায়েলি বাহিনী দাবি করেছে, তারা হামাস কমান্ডারসহ ২৪ জন যোদ্ধাকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তাদের একজন ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের ইসরাইল হামলায় জড়িত ছিলেন বলে জানানো হয়েছে।
তবে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, “ইসরায়েলের এই বক্তব্য মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়; তারা যুদ্ধাপরাধ ঢাকতে বেসামরিকদের হত্যা করছে।”
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, “যুদ্ধবিরতি এখনো ঝুঁকিতে নেই। ইসরায়েল আক্রান্ত হলে পাল্টা জবাব দেবে—এটাই স্বাভাবিক।”
অন্যদিকে মধ্যস্থতাকারী কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল-থানি এই সহিংসতাকে “অত্যন্ত হতাশাজনক ও উদ্বেগজনক” বলে মন্তব্য করেছেন।
