মেট্রোরেল দুর্ঘটনা: ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন
নিহতের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের রুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩:৩১, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় হাইকোর্ট আজ (বুধবার) গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে। আদালত নিহতের পরিবারকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে। একইসঙ্গে মেট্রোরেলের সার্বিক নিরাপত্তা এবং এ দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩০ দিনের মধ্যে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন ও অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।
এর আগে মেট্রোরেল ও দেশের বিভিন্ন ফ্লাইওভারে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাডের গুণগত মান যাচাইয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে দুটি পৃথক রিট দায়ের করা হয়। রিটে বলা হয়, সাম্প্রতিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
গত ২৬ অক্টোবর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। মেট্রোরেলের একটি অংশ থেকে খুলে পড়া বিয়ারিং প্যাডে চাপা পড়ে মারা যান আবুল কালাম (৩৮) নামের এক যুবক। তাঁর বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার ঈশরপাটি গ্রামে। এই ঘটনায় রাজধানীজুড়ে অবকাঠামোগত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনাস্থলে তখন ব্যাপক ভিড় জমে যায় এবং স্থানীয়রা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। পরবর্তীতে পুলিশের উপস্থিতিতে মরদেহ উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হয়।
বিভিন্ন প্রকৌশল বিশেষজ্ঞ ইতিমধ্যে এ দুর্ঘটনাকে “অব্যবস্থাপনা ও মাননিয়ন্ত্রণ ত্রুটির ফলাফল” হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা মনে করেন, মেট্রোরেল ও ফ্লাইওভারসহ বৃহৎ অবকাঠামোগুলোতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের গুণগত মান নিশ্চিত করা এখন রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার অংশ হওয়া উচিত।
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, সরকার এখন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করবে। কমিটি মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোর বিয়ারিং প্যাডসহ যান্ত্রিক অংশগুলোর গুণগত মান পরীক্ষা করবে।
৩০ দিনের মধ্যে এ কমিটিকে বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে, যা ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নীতিমালা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
