শান্তি বজায় রাখতে ঐকমত্য
এলএসি নিয়ে ইতিবাচক আলোচনায় ভারত-চীন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:০৯, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৪:১০, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-এর পশ্চিমাঞ্চলে দীর্ঘদিনের উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে নতুন করে কর্পস কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে বসেছে ভারত ও চীন। গত ২৫ অক্টোবর শনিবার, লাদাখের মোলদো–চুশুল সীমান্ত বৈঠক পয়েন্টে দুই দেশের সেনাপ্রধানদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৈঠকটি ছিল “ইতিবাচক ও সবিস্তার”— উভয় দেশই আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার বিষয়ে একমত হয়েছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, ২৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এই বৈঠক ছিল ভারত-চীনের মধ্যে কর্পস কমান্ডার পর্যায়ের ২৩তম দফার বৈঠক।
চার বছরেরও বেশি সময় পর ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল পুনরায় শুরু হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির আগে ২০২০ সালের শুরুর দিকে চালু থাকা পরিষেবা সীমান্ত উত্তেজনার কারণে স্থগিত ছিল।
সাম্প্রতিক কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ইন্ডিগো এয়ারলাইনস ২৬ অক্টোবর থেকে কলকাতা–গুয়াংজু রুটে দৈনিক, বিরতিহীন ফ্লাইট চালু করেছে। কলকাতায় নিযুক্ত চীনের উপ-কনসাল জেনারেল কিন ইয়ং এই পুনরায় সংযোগকে “দুই দেশের সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন” বলে অভিহিত করেছেন।
২০২০ সালের এপ্রিল মাসে পূর্ব লাদাখ সীমান্তে চীনা সেনাদের অনুপ্রবেশের অভিযোগ তোলে ভারত। সেই বছর ১৫ জুন গলওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষে নিহত হন ২০ জন ভারতীয় সেনা, পাল্টা হামলায় নিহত হন কয়েকজন চীনা সৈন্যও। এর পর থেকেই সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা দেখা দেয়।
২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে দুই দেশ সীমান্তে উত্তেজনা হ্রাসে একমত হয়, যা বর্তমান আলোচনার ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছে।
গত আগস্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে যোগ দিতে চীনের তিয়ানজিন সফর করেন— গলওয়ান ঘটনার পর তার এটি প্রথম চীন সফর।
সেই বৈঠকে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ভারত-চীন সম্পর্কের প্রশংসা করে বলেছিলেন, “ড্রাগন ও হাতি একত্রিত হলে, গোটা এশিয়ার স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের পথ আরও প্রশস্ত হবে।”
বর্তমান কমান্ডার-স্তরের বৈঠককে বিশ্লেষকরা সেই বার্তার ধারাবাহিকতাই মনে করছেন— সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রেখে পারস্পরিক আস্থা গড়ে তোলার এক নতুন প্রচেষ্টা।
