খাজা আসিফের বিস্ফোরক অভিযোগ আফগানিস্তান ভারতের ক্রীড়নক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১২:৪৪, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ এক বিস্ময়কর অভিযোগ তুলেছেন— ভারত নাকি কাবুলকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে পাকিস্তানে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “কাবুল যদি ইসলামাবাদের ওপর আক্রমণ চালায়, তবে পাকিস্তান ‘৫০ গুণ শক্তিশালী’ জবাব দেবে।”
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জিও নিউজের জনপ্রিয় প্রাইমটাইম শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথে’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আসিফ আফগান প্রতিনিধি দলের তীব্র সমালোচনা করেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ইস্তাম্বুলে চারদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত পাকিস্তান-আফগানিস্তান শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরপরই এ মন্তব্য করেন আসিফ।
আসিফকে উদ্ধৃত করে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, “আমাদের মধ্যে আলোচনার সমঝোতা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ কাবুল থেকে ফোন আসে, আর তারা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে যায়।”
তিনি অভিযোগ করেন, “আলোচনার সুতো কেটে দিয়েছে কাবুল নয়, যারা কাবুলকে পুতুলের মতো পরিচালনা করছে— তাদের হাত দিল্লিতে।”
রূপকভাবে তিনি বলেন, “আমি কাবুলের প্রতিনিধিদলের প্রশংসা করি, কিন্তু যারা রশি টেনে পুতুলনাট্য সাজাচ্ছে, তারা দিল্লির নিয়ন্ত্রণে। ভারত কাবুলের মাধ্যমে পাকিস্তানের পশ্চিম সীমান্তে তার পরাজয় পূরণ করতে চাইছে।”
খাজা আসিফ আরও দাবি করেন, “ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে একটি লো ইনটেনসিটি ওয়ার চালাতে চায়। সেই যুদ্ধে তারা আফগানিস্তানকে ব্যবহার করছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, আফগান সামরিক শাসকগোষ্ঠীর কিছু অংশ সম্প্রতি ভারতে গিয়ে ‘মন্দির সফর’ করেছে— যা দুই দেশের মধ্যে অবিশ্বাসের নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে আসা হুমকি প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন,“গত চার বছর ধরে তারা পাকিস্তানের ভেতরে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই— পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদে কাবুলের প্রত্যক্ষ ভূমিকা আছে, আর কাবুল এখন দিল্লির একটি হাতিয়ার।”
তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত ইস্তাম্বুল সংলাপের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় শনিবার (২৫ অক্টোবর)। কিন্তু শেষমেশ কোনও সমঝোতা ছাড়াই আলোচনা ভেঙে যায়।
পাকিস্তান আলোচনায় স্বীকার করে যে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি চুক্তি আছে— যার আওতায় পাকিস্তানের ভূখণ্ড থেকে মার্কিন ড্রোন অপারেশন চালানো সম্ভব।
কাবুলের প্রতিনিধি দল এতে তীব্র ক্ষোভ জানায়, কারণ তারা পাকিস্তান থেকে আফগান আকাশসীমায় মার্কিনি ড্রোন প্রবেশ না করার নিশ্চয়তা চেয়েছিল।
চলতি মাসের শুরুতেই আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এই পটভূমিতে শুরু হওয়া ইস্তাম্বুল সংলাপের ব্যর্থতা দুই দেশের সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে।
