দলের গোলটেবিল বৈঠকে সালাহউদ্দিন
কমিশনের সুপারিশে ‘জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন নেই’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:৪৭, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘জুলাই সনদের পূর্ণ প্রতিফলন নেই’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
তিনি বলেন, “রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু–তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ। জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদ স্বাক্ষরিত হয়েছে, কমিশনের দেওয়া সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশে তার হুবহু প্রতিফলন নেই।”
বুধবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে বিএনপি আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন। বৈঠকের শিরোনাম শিরোনাম- ‘ফ্রম রুল বাই পাওয়ার টু রুল অব ল: ট্রানজিশন টু আ ডেমোক্রেটিক বাংলাদেশ’।
বৈঠকে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “গতকাল (মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সরকারকে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, তাতে কিছু সত্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। এত দিন আমরা মনে করতাম, ঐকমত্য কমিশন রেফারির ভূমিকায় রয়েছে। কিন্তু তাদের দেওয়া সুপারিশে দেখা যাচ্ছে, এর মধ্যে একজন দস্তখতকারী হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা, যিনি কমিশনের সভাপতি। ফলে এটি সরকারের পক্ষ থেকেও একধরনের অনুমোদন।”
তিনি আরও বলেন, “রেফারিকে আমরা কখনো গোল দিতে দেখিনি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, ঐকমত্য কমিশন, সরকার এবং আরও দু-তিনটি রাজনৈতিক দল একই পক্ষ। আমি হয়তো বিপক্ষেই খেলছিলাম।”
বিএনপি নেতা জানান, প্রকাশিত দলিলটি ৯৪ পৃষ্ঠার, যেখানে ঐকমত্য কমিশনে যেভাবে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছিল বা ১৭ অক্টোবর সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদে স্বাক্ষর হয়েছিল, তার হুবহু প্রতিফলন নেই। শুধু আছে কমিশনের প্রস্তাব ও রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ। কিন্তু ঐকমত্যে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া বা নোট অব ডিসেন্ট কোথায়, তার উল্লেখই নেই।”
তিনি আরও জানান, সংবিধান সংশোধনের ৪৮টি দফা প্রস্তাব তফসিল আকারে সংযুক্ত করে গণভোটের কথা বলা হয়েছে, অথচ এ বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনা হয়নি।
সালাহউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু তারা এখন এমন প্রস্তাব দিচ্ছে, যা জাতিকে বিভক্ত করবে, অনৈক্য সৃষ্টি করবে। এর ভিত্তিতে কোনো ঐকমত্য গড়ে উঠবে না।”
নির্বাচনসংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, “আগে জোটভুক্ত দল চাইলে নিজস্ব প্রতীক বা জোটের প্রতীকে অংশ নিতে পারত। এখন অগণতান্ত্রিকভাবে বলা হয়েছে, জোটভুক্ত হলেও নিজস্ব প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এটি উদ্দেশ্যমূলক পরিবর্তন।”
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা চাই, অন্তর্বর্তী সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো নিরপেক্ষ আচরণ করুক, যাতে জাতি আশ্বস্ত হয় এবং ঐক্য বজায় থাকে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশন ও সরকারের নানা পদক্ষেপ আমাদের হতাশ করেছে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ও সরকারের কিছু পদক্ষেপে আমরা গভীর হতাশা প্রকাশ করছি। এগুলোর মাধ্যমে ঐক্যের বদলে বিভাজন তৈরি হচ্ছে।”
