জুলাই সনদ
বাস্তবায়নে সমর্থন জানিয়েছে জামায়াত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:১৭, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী জুলাই জাতীয় সনদ‑র বাস্তবায়ন নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছে। দলটি সুপারিশকে স্বাগত জানিয়েছে এবং দ্রুত আদেশ জারি ও আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে। তাঁদের মতে, সনদে অন্তর্ভুক্ত সংস্কারগুচ্ছ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন অপরিহার্য।
জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেছেন, 'আমরা কমিশনের সুপারিশকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। অবিলম্বে সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও আগামী নভেম্বরের মধ্যে গণভোটের ব্যবস্থা করাই হবে।'
দলটি দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে — সনদের অধীনে গণভোট আয়োজন করা হবে, যাতে জনগণ সরাসরি 'হ্যাঁ' বা 'না' ভোটে প্রস্তাবিত পরিবর্তনগুলো বিবেচনায় নিতে পারে।
গতকাল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে জামায়াত‑এর সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে অংশ নিয়েছে। সেখানে নির্বাচন কমিশনকে ১৮ দফার সুপারিশও দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে — জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজধানী ও জেলা পর্যায়ে সনদের ব্যাপক প্রচার ও গণভোট কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবি।
জামায়াতের মধ্যে রয়েছে এমন ব্যপারও — একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজন করলে ভোটদানে বিভ্রান্তি ও প্রশাসনিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। তাই দলটি যুক্তি দেখাচ্ছে, নির্বাচন থেকে আগে একটি সময় নির্ধারণ করে গণভোটকে সম্পন্ন করা উত্তম। 'জাতিকে জানতে হবে, পরিবর্তন কি হচ্ছে, কাদের নিয়ে হচ্ছে — তাহলেই তারা সুসংগঠিত ভোট দেবে' — বলেন জামায়াত নেতা।
তবে জামায়াত বলেছে, সনদ স্বাক্ষরের পরও কিছু বিষয় এখনো সুনির্দিষ্ট হয়নি — যেমন আদেশের জারি তারিখ, আইনি ভিত্তি ও গণভোটের নির্ধারিত সময়সূচি। দলটি এ দিকগুলোতে স্পষ্টতা কামনা করছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন — জামায়াতের ইতিবাচক মনোভাব সনদ‑প্রক্রিয়াকে বৃহত্তর রাজনৈতিক সমর্থন দান করতে পারে। তবে সনদ‑বাস্তবায়ন হলে তা গ্রহণযোগ্য ও গতিশীল হওয়ার জন্য শুধু বন্দোবস্ত নয়, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, আইনগত প্রস্তুতি এবং জনগণের তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত জরুরি। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, জামায়াতের প্রস্তাবিত 'নভেম্বরে গণভোট' সময়সূচি একটি প্রাঞ্জল উদ্যোগ বলেই বিবেচিত হচ্ছে।
সবশেষে, জামায়াতের ভাষ্য অনুযায়ী — যদি সনদ‑বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আদেশ জারি হয়, তার ভিত্তিতে গণভোট হয়, এবং নতুন আইন বা বিলের মাধ্যমে সংশোধনপূর্বক বাস্তবায়ন হয় তাহলে এটি দেশের রাজনৈতিক ও সংবিধানিক কাঠামোয় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। তবে তা সফল হতে হলে সরকারের প্রতিশ্রুতি, বিরোধী দলগুলো ও নাগরিক সমাজের অংশগ্রহণ একযোগে থাকতে হবে।
