নিউইয়র্কে আগাম ভোটে এগিয়ে মুসলিম মেয়রপ্রার্থী মামদানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩:২৩, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে আসন্ন মেয়র নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে তুমুল রাজনৈতিক উত্তেজনা। আগাম ভোটে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জোহরান মামদানি, যিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রথম মেয়র হওয়ার দৌড়ে ইতিহাস গড়ার পথে।
কিন্তু তার এই উত্থান ভালোভাবে নিচ্ছে না প্রতিপক্ষ।
নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অব ইলেকশনসের প্রকাশিত প্রাথমিক তথ্যে দেখা গেছে, এবারের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট পড়েছে। জরিপে এগিয়ে আছেন প্রগ্রেসিভ ডেমোক্র্যাট নেতা জোহরান মামদানি, যিনি এরই মধ্যে শহরের তরুণ ও নিম্ন আয়ের ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন।
তিনি তার নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন—সবার জন্য বিনামূল্যে বাস পরিষেবা,শিশু যত্নে সরকারি সহায়তা (চাইল্ড কেয়ার সার্ভিস) এবং প্রায় ১০ লাখ ভাড়াটিয়া পরিবারের জন্য বাড়িভাড়া মওকুফ কর্মসূচি।
এই সামাজিক কল্যাণমুখী অঙ্গীকারই তাকে শহরের উদারপন্থি ভোটারদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছে।
৩৩ বছর বয়সী এই মুসলিম প্রার্থী গাজায় ইসরাইলি হামলার কঠোর সমালোচক হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন সময়ে প্রকাশ্যে ইসরাইলের আগ্রাসন ও যুদ্ধাপরাধের নিন্দা জানিয়ে তিনি আলোচনায় আসেন।
এই অবস্থানের জেরেই নিউইয়র্কের প্রভাবশালী ইহুদি ধর্মগুরুদের (র্যাবাই) একাংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে টাইমস অব ইসরায়েল।
ধর্মগুরুদের পক্ষ থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে যাতে সাধারণ ইহুদি ভোটাররা মামদানিকে ভোট না দেন। ইতিমধ্যেই এক হাজারেরও বেশি র্যাবাই মামদানির বিরোধিতায় স্বাক্ষর দিয়েছেন একটি চিঠিতে—যা মার্কিন নির্বাচনী ইতিহাসে বিরল ঘটনা বলে উল্লেখ করেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্স ও এপি নিউজ।
নিউইয়র্কের সাবেক গভর্নর ও রিপাবলিকান প্রার্থী অ্যান্ড্রু কুমো মামদানিকে ‘ইসলামপন্থি’ বলে অভিযুক্ত করেছেন। মামদানির প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো “অবাস্তব ও আর্থিকভাবে বিপজ্জনক”।
এছাড়া স্থানীয় কনজারভেটিভ গোষ্ঠীও মামদানির নির্বাচনী ব্যানার ও প্রচারণা পোস্টারে হামলার অভিযোগ এনেছে—যা এখন সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত বিষয়।
আসছে ৪ নভেম্বর নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি মামদানি জয়ী হন, তবে এটি হবে মার্কিন ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো মুসলিমের নিউইয়র্ক নগরপিতা হওয়ার ঘটনা।
এমন এক সময়ে, যখন মার্কিন রাজনীতিতে ইসলামভীতি ও বর্ণবাদী প্রবণতা নিয়ে বিতর্ক চলছেই, মামদানির উত্থানকে অনেকেই “অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির নতুন অধ্যায়” হিসেবে দেখছেন।
