২০২৬ সালে আসিয়ানের সভাপতির দায়িত্বে ফিলিপাইন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩:০৩, ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:০০, ২৯ অক্টোবর ২০২৫
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক জোটের (আসিয়ান) নতুন সভাপতি হিসেবে ফিলিপাইন দায়িত্ব গ্রহণ করছে। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মালয়েশিয়া রাজধানী কুয়ালালামপুরে ৪৭তম আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম প্রতীকীভাবে সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্ডিন্যান্ড মার্কোস জুনিয়রের হাতে।
দক্ষিণ চীন সাগর হবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, আনোয়ার ইব্রাহিম চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন, তবে ২০২৬ সালের শুরু থেকে দায়িত্ব নেবে ম্যানিলা। তখন আসিয়ানের এজেন্ডায় দক্ষিণ চীন সাগরের আঞ্চলিক বিরোধই প্রধান হয়ে উঠবে। ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামসহ চারটি আসিয়ান দেশ এই সামুদ্রিক অঞ্চলে দাবিদার।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক আদালত এই বিতর্কে দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের দাবিকে আইনি ভিত্তিহীন ঘোষণা করলেও, চীন ও ফিলিপাইনের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। নিয়মিত সামুদ্রিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটছে।
আচরণবিধি ও সহযোগিতার আশাবাদ
আসিয়ান ও চীন বর্তমানে ‘কোড অব কনডাক্ট’ নামে একটি আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা করছে, যার লক্ষ্য আগামী বছরের মধ্যেই একটি চুক্তি চূড়ান্ত করা।
প্রেসিডেন্ট মার্কোস বলেছেন, `আমরা যদি সহযোগিতা ও অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকি, বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে, তবে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া সম্ভব।‘
ম্যানিলা-ভিত্তিক ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক ডন ম্যাকলেইন গিল মনে করেন, ফিলিপাইন আসিয়ান সভাপতির দায়িত্বে থেকে সামুদ্রিক নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দেবে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, “চীন কোনো চুক্তিতে সম্মত হলেও তার বাস্তব প্রয়োগে দুর্বলতা থেকে যেতে পারে।”
সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র
কূটনীতিকরা বলছেন, ম্যানিলা চীনের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে ও সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করবে। সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, যা সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এবং মৎস্য সম্পদে প্রবেশাধিকারের নিশ্চয়তা।
মিয়ানমার ইস্যুতেও ভূমিকা
ফিলিপাইন সভাপতির দায়িত্বে থেকে মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতেও আসিয়ানের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটি সহিংসতায় জর্জরিত। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মুস্তাফা ইজ্জুদ্দিন বলেন, ‘ফিলিপাইন সরকারের জন্য দক্ষিণ চীন সাগর ইস্যুটি যেন আসিয়ানের অন্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারগুলোকে ছাপিয়ে না যায়, তা নিশ্চিত করা জরুরি।’
আগামী ২৮ ডিসেম্বর মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আসিয়ান সংগঠন হিসেবে ওই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না, তবে পৃথক সদস্য রাষ্ট্র চাইলে পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারবে।
