যুক্তরাজ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণীকে ধর্ষণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:৪৪, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
ছবি : এনডিটিভি
যুক্তরাজ্যের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস অঞ্চলে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ওয়ালসলের পার্ক হল এলাকায় শনিবার সন্ধ্যায় এই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় পুলিশ।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভিসহ কয়েকটি গণমাধ্যমে এ খবর গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করেছে।
ওয়েস্ট মিডল্যান্ডস পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যায় তারা ওয়ালসলের পার্ক হল এলাকায় এক তরুণীকে রাস্তার ধারে চরম আতঙ্কে কাঁদতে দেখা যায়। পরবর্তীতে জানা যায়, ওই তরুণীকে তার বসতবাড়িতে ঢুকে এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এটি একটি “racially aggravated attack”, অর্থাৎ শিকার ব্যক্তির বর্ণ বা জাতিগত পরিচয়কে ঘৃণার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
ডিটেকটিভ সুপারিনটেনডেন্ট রোনান টাইরার বলেন,“এটি এক ভয়াবহ ও লজ্জাজনক অপরাধ। আমরা অভিযুক্তকে গ্রেফতারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছি। আমাদের তদন্ত দল প্রমাণ সংগ্রহে কাজ করছে এবং অভিযুক্তের প্রোফাইল তৈরি করছে।”
তিনি আরও জানান, যাদের কাছে ঘটনাস্থলের কোনো সিসিটিভি বা ড্যাশক্যাম ফুটেজ আছে, তারা যেন দ্রুত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
পুলিশের বিবরণ অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তি শ্বেতাঙ্গ, বয়স আনুমানিক ত্রিশের কোঠায়, ছোট চুলের এবং ঘটনার সময় গাঢ় রঙের পোশাক পরা ছিল।
স্থানীয় সিখ সংগঠন জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার তরুণী একজন পাঞ্জাবি নারী। সংগঠনটি বলেছে,“এই ঘটনার ভয়াবহ দিক হলো, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাড়ির দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ধর্ষণ করেছে। গত দুই মাসে ওয়েস্ট মিডল্যান্ডসে এটি দ্বিতীয় জাতিগতভাবে প্রভাবিত ধর্ষণ।”
গত মাসেও কাছের ওল্ডবুরি এলাকায় এক ব্রিটিশ সিখ নারীকে একইভাবে ঘৃণাজনিত ধর্ষণের শিকার হতে হয়। সেই মামলায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও পরে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ওয়ালসল পুলিশের চিফ সুপারিনটেনডেন্ট ফিল ডলবি বলেন,“ওয়ালসল একটি বহুজাতিক এলাকা, তাই এই ধরনের ঘৃণাজনিত অপরাধ আমাদের সমাজে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করবে। পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে, আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি।”
পুলিশের পাবলিক প্রটেকশ্ন ইউনিট ও ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহ করেছে এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে।
ব্রিটেনে সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ এশীয় ও সংখ্যালঘু নারীদের ওপর সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মানবাধিকার সংগঠনগুলো সতর্ক করছে।
ইউকে হোম অফিসের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এ ধরণের অপরাধের হার বেড়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনলাইন ঘৃণাচর্চা, রাজনৈতিক বিভাজন ও সামাজিক অসহিষ্ণুতা এসব ঘটনার মূল উৎস হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
