জুলাই সনদের বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে: গণসংহতি আন্দোলন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫:২৫, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল জানিয়েছেন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সর্বশেষ সুপারিশ সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াকেই অনিশ্চয়তার মুখে ফেলছে।
তারা বলেন, ঐকমত্য কমিশনের বেশ কিছু সুপারিশ কমিশনের নিজস্ব বৈঠকের আলোচনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এর ফলে সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে, যা জুলাই সনদের গণতান্ত্রিক সম্ভাবনাকে আশঙ্কার মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
গণসংহতি আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধুমাত্র গণভোটের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়ন কিংবা ভিন্নমতের নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। কমিশনের সুপারিশে ভিন্নমত সমাধানের পদ্ধতি অস্পষ্ট, যা রাজনৈতিক অনৈক্যকে বাড়িয়ে দেবে। তারা মনে করেন, যেসব বিষয়ে মাসের পর মাস রাজনৈতিক দলগুলো গভীর আলোচনা ও বিতর্ক করে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, সেসব জটিল প্রশ্ন এক মুহূর্তে গণভোটের মাধ্যমে সমাধানের চিন্তা বাস্তবোচিত নয়।
তাদের মতে, কোনো ভিন্নমত “চাপিয়ে দেওয়ার” প্রক্রিয়া গণতন্ত্রবিরোধী এবং জাতীয় ঐক্যের পরিপন্থী। এটি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে বাধা সৃষ্টি করবে।
নেতারা বলেন, নির্বাচিত সংসদের কর্তৃত্ব উপেক্ষা করে অন্তর্বর্তী সরকারের আদেশেই সংবিধান সংস্কার করা হলে তা টেকসই হবে না। বরং এতে সংবিধান সংস্কার পরিষদ নাম দিয়ে কেবল একটি ‘রাবার স্ট্যাম্প’ প্রতিষ্ঠান তৈরি হবে।
তারা মনে করিয়ে দেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল ভিত্তিই ছিল জনগণের অনুমোদন। তাই আগামি সংসদকে সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা প্রদান এবং নির্বাচনকেই সংস্কার পরিষদের নির্বাচন হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাবই সবচেয়ে যৌক্তিক পন্থা। অথচ ঐকমত্য কমিশন সে পথে এগোয়নি, বরং দলগুলোর মধ্যে নতুন বিভাজন সৃষ্টি করছে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশমালা দেখে মনে হচ্ছে কমিশন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। এতে মনে হচ্ছে, কমিশন কোনো বিশেষ পক্ষকে খুশি করার প্রয়াসে জাতীয় ঐকমত্যকেই বিপন্ন করছে। এমন পরিস্থিতি দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণ ও জাতীয় স্বার্থের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
তারা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান— অবিলম্বে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে বর্তমান অচলাবস্থার সমাধান করতে হবে, যাতে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই সম্পন্ন হয়।
