ঐতিহ্য মেনেই ১ ফেব্রুয়ারি একুশের বইমেলা আয়োজন করতে হবে: একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭:৪৭, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৮, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালের অমর একুশে গ্রন্থমেলা ফেব্রুয়ারিতেই আয়োজনের দাবি জানিয়েছে ‘একুশে বইমেলা সংগ্রাম পরিষদ’। সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রেস কনফারেন্সের সভাপতি আবুল বাসার ফিরোজ শেখ বলেন, “বইমেলা জনগণের উৎসব— সরকার চাইলে স্থগিত করতে পারে না।”
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এ দাবি জানায়। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদস্য ও সাংস্কৃতিক ঐক্যের নেতা খন্দকার শাহ আলম, আর অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক মফিজুর রহমান লালটু।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, “অমর একুশের বইমেলা জনগণের বইমেলা। প্রয়োজনে আমরা রফিক, শফিক, সালাম, বরকত, জব্বারের মতো বুকের রক্ত ঢেলে দেব, কিন্তু একুশের বইমেলা বন্ধ করতে দেব না। সরকার বলছে নির্বাচনের কারণে নিরাপত্তা দিতে পারবে না — অথচ জনগণই তো সব সরকারের নিরাপত্তা দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “৪ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর মধ্যে ঘোষণা না এলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।”
‘বইমেলা জনগণের চেতনার উৎস’ — খন্দকার শাহ আলমের লিখিত বক্তব্য
লিখিত বক্তব্যে খন্দকার শাহ আলম বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তে একুশে বইমেলা স্থগিত হওয়ায় দেশের হাজার হাজার লেখক, পাঠক, প্রকাশক ও সংস্কৃতিকর্মী ক্ষুব্ধ। একুশের বইমেলা শুধু বই বিক্রির মেলা নয়, এটি জাতিসত্তার প্রতীক, মুক্তচিন্তা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন।”
তিনি যুক্তি দেন, “নির্বাচনের অজুহাতে মেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। অতীতেও রমজান মাসে, এমনকি জাতীয় নির্বাচনের মধ্যেও বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।”
এডর্ন প্রকাশনীর প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা একুশে বইমেলা একুশের ফেব্রুয়ারিতেই চাই।”উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জামশেদ আনোয়ার তপন ঘোষণা দেন, “চার তারিখের মধ্যে সরকার ঘোষণা না দিলে পাঁচ তারিখে আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব।”
কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, “বইমেলা ব্যর্থ হতে দেব না— এটা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।”
প্রেসক্লাব সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ বলেন,“সংস্কৃতি ক্ষেত্রে সংস্কার কমিশন দরকার। সরকার এক বছরেও নির্বাচন করতে পারছে না— ভয়ংকর দৈন্য অবস্থায় আছে। সময় থাকতে মেলা আয়োজন করুক, নইলে সংস্কৃতি আন্দোলন জেগে উঠবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— কবি হাসান ফখরী, প্রকাশক আলমগীর শিকদার লোটন, দেলওয়ার হোসেন, কবি লিলি হক, কৌমুদী নার্গিস, রফিক চৌধুরী, সবুজ মনির, তাসকিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক জান্নাতুল ফেরদৌস পান্নাসহ শতাধিক লেখক, কবি, প্রকাশক, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মী।
