শিশুতোষ গল্পের বইয়ের জন্য এবার বুকার পুরস্কার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২০:১৬, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:০৫, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ সাহিত্য পুরস্কার ‘বুকার প্রাইজ’র আয়োজকরা এবার শিশুতোষ গল্পের বইয়ের জন্য নতুন পুরস্কার চালু করেছে—‘চিলড্রেন’স বুকার প্রাইজ’। ২০২৬ সালে শুরু হবে এই আয়োজন, আর ২০২৭ সাল থেকে প্রতিবছর দেওয়া হবে এ পুরস্কার।
৮ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের জন্য লেখা শ্রেষ্ঠ সমসাময়িক কাহিনিনির্ভর সাহিত্যকে এই পুরস্কারের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। এই পুরস্কারের বিশেষত্ব হলো, এর বিচারক প্যানেলে বড়দের পাশাপাশি থাকবে শিশুরাও।
বুকার প্রাইজ ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী গ্যাবি উড বলেছেন, ‘গত ২০ বছরে এটি আমাদের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ, যার প্রভাব দীর্ঘদিন টিকে থাকবে।’
প্রথম আসরের প্রধান বিচারক থাকছেন ‘যুক্তরাজ্যের চিলড্রেনস লরিয়েট’ (শিশু সাহিত্যিক দূত) ফ্র্যাঙ্ক কটরেল-বয়েস। তিনি জনপ্রিয় শিশুতোষ বই ‘মিলিয়নস’র (২০০৪) লেখক। ফ্র্যাঙ্ক কটরেল-বয়েস বলেন, ‘এই পুরস্কার শিশুদের বইপ্রেমে নতুন আলো জ্বালাবে। বিচার পর্ব হবে প্রাণবন্ত ও উত্তেজনাপূর্ণ!’
প্রথমে তিনজন প্রাপ্তবয়স্ক বিচারক আটটি বইয়ের সংক্ষিপ্ত তালিকা তৈরি করবেন। এরপর তিনজন শিশু বিচারক যুক্ত হবে এবং যৌথভাবে চূড়ান্ত বিজয়ী বইটি নির্বাচন করা হবে।
বুকার ও ইন্টারন্যাশনাল বুকারের মতোই, সংক্ষিপ্ত তালিকার প্রত্যেক লেখক পাবেন ২,৫০০ পাউন্ড করে, আর বিজয়ী লেখক পাবেন ৫০,০০০ পাউন্ড পুরস্কার। এ ছাড়া নির্বাচিত বইগুলোর কমপক্ষে ৩০ হাজার কপি শিশুদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
পুরস্কারটি সারা বিশ্বের লেখকদের জন্য উন্মুক্ত। শর্ত হলো—বইটি অবশ্যই ইংরেজিতে লেখা হতে হবে বা ইংরেজিতে অনূদিত হতে হবে এবং প্রথম আসরের জন্য ২০২৫ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৩১ অক্টোবরের মধ্যে বইটি যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডে প্রকাশিত হতে হবে।
প্রখ্যাত লেখক ডেম জ্যাকুলিন উইলসন একে বলেছেন ‘একটি চমৎকার ধারণা’। আর শিশু সাহিত্যিক অ্যান ফাইন বলেন, ‘শিশুদের সাহিত্য বহুদিন ধরে বই জগতের “অবহেলিত সিন্ডারেলা”। এমন উদ্যোগই তাকে নতুন মর্যাদা দেবে।’
এই ঘোষণাটি এসেছে এমন সময়ে, যখন ব্রিটেনে শিশুদের পড়ার আগ্রহ গত ২০ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে বলে জানাচ্ছে ন্যাশনাল লিটারেসি ট্রাস্ট। এ কারণেই ২০২৬ সালকে ঘোষণা করা হয়েছে ‘ন্যাশনাল ইয়ার অব রিডিং’ হিসেবে।
নতুন এই পুরস্কার তাই কেবল সাহিত্যিক সম্মানই নয়, বরং নতুন প্রজন্মকে বইয়ের জগতে ফিরিয়ে আনার এক অনন্য উদ্যোগ বলেই মনে করছে সাহিত্যমোদিরা।
