চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে মিছিল ও সমাবেশ
একুশে বইমেলা যথারীতি ফেব্রুয়ারিতেই আয়োজনের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২:০০, ১০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:১৮, ১০ অক্টোবর ২০২৫

অমর একুশে বইমেলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে যথারীতি ফেব্রুয়ারি মাসেই আয়োজনের দাবি জানিয়েছে ‘চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। এ ছাড়া সারা দেশে ‘তৌহিদী জনতার’ নামে ‘মব সন্ত্রাসীদের’ গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করেছে তারা।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের’ উদ্যোগে সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
চারণের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিখিল দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি শাহজাহান কবির, কবি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া, আব্দুল্লাহ আল মামুন তাজু ও অর্জুন দাস।
সমাবেশে নেতারা বলেন, নির্বাচনকে অজুহাত করে বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্ত একটি অপরিনামদর্শী পদক্ষেপ। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অতীতেও দেশে রোজা ও নির্বাচনের মধ্যে বইমেলা হয়েছে, এতে কোন সমস্যা হয়নি। ভাষা আন্দোলন বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার এক অনন্য লড়াই। ভাষার মাসে বইমেলা বাংলাভাষা ও সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে। ফলে বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্তের পেছনে সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কোন সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ষড়যন্ত্রের অংশও হতে পারে। আমরা আশা করি, সরকার যথাসময়ে বইমেলা আয়োজন করে অগণিত প্রকাশক, লেখক, পাঠকের প্রত্যাশা পূরণ করবে।
নেতারা আরও বলেন, ৫ আগস্ট ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে ‘তৌহিদী জনতার’ নামে একদল ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে মাজার-মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, নারীদের খেলা বন্ধ, বাউলদের ওপর নির্যাতন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এই চিহ্নিত গোষ্ঠী সারা দেশের বহু জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ও স্মৃতিচিহ্ন ধ্বংস করেছে। এদের পৈশাশিকতা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে ‘নুরাল পাগল’ নামে একজন ‘ধর্মীয় লোকদার্শনিকের’ মরদেহ কবর থেকে তুলে প্রকাশ্যে পুড়িয়ে ফেলে। এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তি কথায় কথায় যে কাউকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে নির্যাতন করে, জেলখানায় নিক্ষেপ করে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্তাব্যক্তিরা এই ‘মব সন্ত্রাসকে’ ‘প্রেসার গ্রুপের’ সাথে তুলনা করে অপরাধীদের উৎসাহিত করছে। ‘মব সন্ত্রাসীদের’ আইনের আওতায় না আনার ফলে এরা দ্বিগুণ উৎসাহে অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তবে আশার কথা হলো কিছু কিছু জায়গায় জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করছে। সরকারের প্রতি আস্থা হারিয়ে জনগণ এদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছে। আমরা ‘মব সন্ত্রাসীদের’ দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
নেতারা একটি ‘চিহ্নিত ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ কর্তৃক স্কুলে গানের শিক্ষক নিয়োগ বাতিল করার দাবি এবং ঐতিহ্যবাহী শরৎ উৎসব বন্ধ করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।