বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

‘প্রলয়ের আতঙ্কের মাঝেও শিল্পের শক্তি’

সাহিত্যে নোবেল পেলেন হাঙ্গেরির লাসলো ক্রাসনাহোরকাই

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:২৮, ৯ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৭:৪৭, ৯ অক্টোবর ২০২৫

সাহিত্যে নোবেল  পেলেন হাঙ্গেরির  লাসলো ক্রাসনাহোরকাই

ছবি : সংগৃহীত

হাঙ্গেরির বিখ্যাত ঔপন্যাসিক ও চিত্রনাট্যকার লাসলো ক্রাসনাহোরকাই পেয়েছেন ২০২৫ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার। স্টকহোমে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে নোবেল কমিটি ঘোষণা করে— তার রচনাজগৎ “অ্যাপোক্যালিপটিক ভয়ের মাঝেও শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করেছে।”

‘পাগলামির সীমা পর্যন্ত বাস্তবতা খোঁজা’

৭১ বছর বয়সী লাসলো ক্রাসনাহোরকাই দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় সাহিত্য জগতে এক রহস্যময় প্রতিভা হিসেবে পরিচিত। তাঁর উপন্যাসগুলোতে দার্শনিক নিরীক্ষা, অন্ধকার সামাজিক বাস্তবতা এবং মানবমনের ভয়ঙ্কর জটিলতা একাকার হয়ে থাকে। লেখকের নিজের ভাষায়, তাঁর কাজের উদ্দেশ্য হলো— “বাস্তবতাকে এমন গভীরভাবে দেখা, যতক্ষণ না তা পাগলামিতে রূপ নেয়।”
নোবেল কমিটির ঘোষণায় বলা হয়, ক্রাসনাহোরকাইয়ের সৃষ্টি “একদিকে যেমন প্রলয়-পরবর্তী আতঙ্ক ও মানবিক শূন্যতার দলিল, তেমনি অন্যদিকে তা শিল্প ও নৈতিকতার অমর শক্তির সাক্ষ্য।” তার সাহিত্যকর্মে অ্যাবসারডিসম ,বিকৃত অতিরঞ্জন) এবং অদ্ভুত নিস্তব্ধতার সৌন্দর্য মিলেমিশে গেছে।

‘দুর্লভ মুদ্রার মতো ছড়ানো’ সাহিত্য

যদিও তার মাত্র কয়েকটি বই ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে, সমালোচক জেমস উড একসময় বলেছিলেন— “লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের বই হাত বদল হয় যেন দুর্লভ মুদ্রার মতো।” মার্কিন লেখিকা সুসান সনট্যাগ তাকে একসময় আখ্যা দিয়েছিলেন “সমকালীন প্রলয়বাদের মহাগুরু” হিসেবে।

ইতিহাসের ছায়া থেকে উঠে আসা এক লেখক

লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ১৯৫৪ সালে জন্ম নেন হাঙ্গেরির গিউলা শহরে— ১৯৫৬ সালের হাঙ্গেরীয় বিপ্লবের ঠিক দুই বছর আগে। সোভিয়েত দমননীতির ছায়ায় বেড়ে ওঠা এই লেখক এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমি এমন এক দেশে জন্মেছি যেখানে একজন নান্দনিক ও নৈতিক সংবেদনশীল মানুষ টিকে থাকতে পারে না।”

তাঁর উপন্যাসগুলো প্রায়ই শীতল মধ্য ইউরোপীয় গ্রাম বা অনন্ত ধ্বংসপ্রায় সমাজে স্থাপিত হয়— যেখানে মানুষ ঈশ্বরহীন জগতে অর্থের সন্ধানে ছুটে বেড়ায়।

আন্তর্জাতিক সাহিত্যমঞ্চে ‘অপোক্যালিপ্টিক কণ্ঠ’

সমালোচকরা মনে করেন, লাসলো ক্রাসনাহোরকাইয়ের সাহিত্য এমন এক সময়ের প্রতিচ্ছবি, যখন মানুষ সভ্যতার ধ্বংসের ভয় আর আত্মার নিঃসঙ্গতা নিয়ে সংগ্রাম করছে। তাঁর কলমে ধ্বংস আর পুনর্জন্ম, ভয় আর বিশ্বাস— একই বৃত্তে ঘুরে বেড়ায়।

নোবেল কমিটির ভাষায়, “অপোক্যালিপ্টিক সন্ত্রাসের মাঝেও তিনি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন— শিল্পই মানবতার শেষ আশ্রয়।”

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

পুয়ের্তো রিকোর জালে মেসির আর্জেন্টিনার ৬ গোল
স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বিতর্কে তোলপাড়
চাকসু নির্বাচন অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ
রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের আগুন গার্মেন্টসের দ্বিতীয় তলা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনিসিপিকে প্রতীক নিতে হবে
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ভারতের ৩ কফ সিরাপ: ডব্লিউএইচও
বুধবার থেকে শুরু অনলাইন জামিননামা প্রক্রিয়া
শহীদ মিনারে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান
আগামী রবিবার থেকে মাসব্যাপী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান শুরু