নেদারল্যান্ডসে প্রথম সমকামী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে ইয়েটেন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৪৯, ৩০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২০:১১, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
নেদারল্যান্ডসের জাতীয় নির্বাচনে বড় সাফল্য পেয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় বামপন্থী দল ডেমোক্র্যাটিক ৬৬ (ডি৬৬)। উল্লেখযোগ্য আসন জিতে সরকার গঠনের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছে দলটি। বিপরীতে বড় ধাক্কা খেয়েছে কট্টর ডানপন্থী রাজনীতির মুখপাত্র গির্ট উইল্ডার্সের ফ্রিডম পার্টি (পিভিভি)।
বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৯০ শতাংশ ভোট গণনা শেষে দেখা গেছে, ১৫০ আসনের সংসদে ডি৬৬ ও পিভিভি—দুই দলই পেয়েছে ২৬টি করে আসন। তবে আগের নির্বাচনের তুলনায় ডি৬৬-এর আসন সংখ্যা প্রায় তিন গুণ বেড়েছে, যা দলটির ইতিহাসে এক নজিরবিহীন অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ভোটাররা এবার ‘ঘৃণার রাজনীতিকে’ পরিহার করে কেন্দ্রীয় বামপন্থী ও প্রগতিশীল রাজনীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে উইল্ডার্সের দলের ভরাডুবি ইউরোপীয় ডানপন্থী রাজনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন অনেকে।
বিজয়ের পর ডি৬৬ নেতা রব ইয়েটেন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছেন। ৩৭ বছর বয়সী এই রাজনীতিক হতে যাচ্ছেন নেদারল্যান্ডসের সবচেয়ে কমবয়সী এবং প্রথম প্রকাশ্যে সমকামী প্রধানমন্ত্রী।
বিজয়োত্তর প্রতিক্রিয়ায় ইয়েটেন বলেন, “আজ ডাচ জনগণ ঘৃণার রাজনীতিকে বিদায় জানিয়েছে। আমরা দেখিয়েছি, ইতিবাচকতা ও ঐক্যের শক্তি বিভাজনের রাজনীতিকে পরাজিত করতে পারে।”
ইয়েটেন সাম্প্রতিক সময়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন আবাসন সংকট নিরসন, শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ ও অভিবাসন নীতিতে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নেওয়ার কারণে। তার নেতৃত্বে ডি৬৬ দল তরুণ ভোটারদের মধ্যেও বিপুল সাড়া পায়।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরে মুসলিমবিরোধী ও কঠোর অভিবাসনবিরোধী অবস্থানের জন্য পরিচিত গির্ট উইল্ডার্স বলেছেন, “ফলাফল হতাশাজনক, তবে রাজনীতি ছাড়ছি না।”
উইল্ডার্সের প্রস্তাবিত নীতিগুলোর মধ্যে ছিল—
আশ্রয়প্রার্থীদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা,
ইউক্রেনীয় শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো,
বিদেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধ করে সেই অর্থ স্বাস্থ্য ও জ্বালানি খাতে ব্যয় করা।
তবে আগের মতো এবারও কোনো মূলধারার দল তার সঙ্গে জোটে যেতে রাজি নয়।
নেদারল্যান্ডসে সরকার গঠনের জন্য পার্লামেন্টে প্রয়োজন ৭৬টি আসন। ফলে অন্তত চারটি দল নিয়ে জোট সরকার গঠনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। সম্ভাব্য জোট হতে পারে—ডি৬৬ (কেন্দ্রীয় বামপন্থী), খ্রিষ্টান গণতান্ত্রিক দল (সিডিএ),কেন্দ্র-ডানপন্থী ভিভিডি (ভিভিডি),সবুজ-শ্রমিক জোট (জিএল-লেবার)
তবে দেশটিতে ঐতিহ্যগতভাবে জোট আলোচনাগুলো দীর্ঘ ও জটিল হয়ে থাকে। ফলে নতুন সরকার গঠনে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।
