দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য নতুন নীতিমালা জারি করল নির্বাচন কমিশন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৪:২৯, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে নতুন নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ইসি সচিবালয় থেকে ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা ২০২৫’ প্রকাশ করা হয়। এটি শুধুমাত্র দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা ও ব্যক্তিদের জন্য প্রযোজ্য হবে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, নির্বাচনের সুষ্ঠুতা ও অবাধ পরিবেশ নিশ্চিত করার পাশাপাশি কোনো ত্রুটি বা অনিয়ম শনাক্ত করা এবং ভোটারদের আস্থা বৃদ্ধিই এই পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য।
নিবন্ধনের জন্য আগ্রহী সংস্থাগুলোকে ১৫ দিনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। আবেদনকারীদের গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকারভিত্তিক কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং গঠনতন্ত্রে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন প্রচারে অঙ্গীকার থাকতে হবে।
নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত কেউ পর্যবেক্ষক বা সংস্থার নেতৃত্বে থাকতে পারবেন না।
নামের মিলজনিত বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলে বা পূর্বে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদন দাখিল করলে সংস্থা অযোগ্য বিবেচিত হবে।
আবেদনকারীকে হলফনামা দিতে হবে যে, সংস্থার কোনো সদস্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
প্রতিটি নিবন্ধন ৫ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। এ সময়ের মধ্যে সংস্থাকে অন্তত ১টি জাতীয় নির্বাচন ও ৪টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং দ্বিবার্ষিক প্রতিবেদন ইসিতে জমা দিতে হবে। নির্ধারিত শর্ত মানলে মেয়াদ নবায়ন করা যাবে।
পর্যবেক্ষক হওয়ার যোগ্যতা
বাংলাদেশি নাগরিক এবং ২১ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়স
ন্যূনতম এইচএসসি বা সমমানের ডিগ্রি
কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্যতা না থাকা
কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্বার্থ না থাকা
সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানীয় ভোটার না হওয়া পর্যবেক্ষক মোতায়েন করা যাবে নির্বাচনের আগের দিন, ভোটের দিন ও পরের দিন—মোট তিন দিনের জন্য।
নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া
কোনো সংস্থা নীতিমালা লঙ্ঘন বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে ইসি ১০ দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে নোটিশ পাঠাবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে বা অভিযোগ প্রমাণিত হলে কমিশন নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে। এ বিষয়ে কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, নতুন নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্য হলো পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় একক মানদণ্ড তৈরি করা, যাতে দেশীয় সংস্থাগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। তারা আশা প্রকাশ করেন, এই নীতিমালা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ আরও শক্তিশালী করবে।
