যে কাজ সর্বাধিক মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:২৯, ৭ নভেম্বর ২০২৫
ছবি: প্রতীকী
পরকালের শেষ পরিণতি নিয়ে ভাবলে মানুষের মনে দুটি গন্তব্য হাজির হয়। জান্নাত ও জাহান্নাম। মানুষ নিজেই তার আমল ও আচরণের মাধ্যমে এই দুটি গন্তব্যের দিকে যাত্রা করে। নবীজি (সা.) গভীর অর্থবহ এক সংক্ষিপ্ত হাদিসে জান্নাতের পথে চলার সহজতম সূত্র জানিয়ে দিয়েছেন।
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবীজি (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন কাজ বা কোন জিনিস সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, ‘আল্লাহভীতি, সদাচার ও উত্তম চরিত্র।’
আবার তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কোন কাজ বা কোন জিনিস সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, ‘মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি)
এই হাদিস মানবজীবনের নৈতিক দিকনির্দেশনার সারসংক্ষেপ। তাকওয়া বা আল্লাহভীতি এমন এক শক্তি, যা মানুষের অন্তরকে সজাগ রাখে, তাকে অন্যায়ের পথে যেতে দেয় না। যে ব্যক্তি সর্বদা এই ভেবে সচেতন থাকে, আল্লাহ তার প্রতিটি কাজ দেখছেন, সে মানুষকে কষ্ট দেওয়া, মিথ্যা বলা বা অন্যের অধিকার হরণ করা থেকে বিরত থাকে। তাকওয়া শুধু নামাজ-রোজার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি চিন্তা, কথা ও আচরণের প্রতিটি স্তরে প্রকাশ পায়।
নবীজি (সা.) সদাচার ও উত্তম চরিত্রকে জান্নাতের চাবিকাঠি বলেছেন। কারণ চরিত্রই মানুষকে মানুষ করে তোলে। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, রাগ, অহংকার, এগুলো চরিত্রকে কলুষিত করে। আর বিনয়, ধৈর্য, সত্যবাদিতা, দানশীলতা ও দয়ার মতো গুণাবলি চরিত্রকে আলোকিত করে তোলে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আমি সুন্দর চরিত্র পরিপূর্ণ করতে প্রেরিত হয়েছি।’ উত্তম চরিত্র এমন এক সম্পদ, যা পরিবারে শান্তি আনে, সমাজে নিরাপত্তা সৃষ্টি করে এবং মানব সম্পর্কে সৌহার্দ্য স্থাপন করে।
অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে মুখ ও লজ্জাস্থান। মুখ তথা জিহ্বা এমন একটি অঙ্গ, যা মানুষকে অতি সহজেই ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। মিথ্যা, পরনিন্দা, গিবত, অপবাদ, কটূকথা, এসবের মাধ্যমে একজন মানুষ অজান্তেই তার পরকাল নষ্ট করে ফেলে।
লজ্জাস্থান তথা যৌনাঙ্গের অবাধ ব্যবহার সমাজে অশান্তি, ব্যাভিচার ও অধঃপতনের কারণ হয়। তাই ইসলাম পবিত্রতার উপর জোর দিয়েছে এবং অবৈধ সম্পর্ককে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার মুখ ও লজ্জাস্থানকে হেফাজত করবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দিচ্ছি।’ (সহিহ বুখারি)
