দিল্লি বিস্ফোরণের আগ থেকেই জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখায় আফিরা বিবি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ২১:০০, ১২ নভেম্বর ২০২৫
জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখা ‘জামাত-উল-মোমিনাত’-এর অন্যতম ‘শুরা’ সদস্য আফিরা বিবি এবং তার স্বামী পুলওয়ামা হামলার ষড়যন্ত্রকারী ইউসুফ আজহার। ছবি: এনডিটিভি
দিল্লির ভয়াবহ বিস্ফোরণের কয়েক সপ্তাহ আগেই জইশ-ই-মহম্মদ তাদের দলে নতুন সদস্য হিসেবে নিয়েছিল আফিরা বিবিকে। তিনি হলেন ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী ইউসুফ আজহারের স্ত্রী। গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, আফিরা এখন জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা শাখা ‘জামাত-উল-মোমিনাত’-এর অন্যতম মুখ এবং সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ ‘শুরা’-র সদস্য।
তিনি সংগঠনের প্রধান মাসুদ আজহারের ছোট বোন সাদিয়া আজহারের সঙ্গে একত্রে কাজ করবেন। সাদিয়াই ১৯৯৯ সালের কান্দাহার বিমান ছিনতাইয়ের অন্যতম পরিকল্পনাকারী জঙ্গি ইউসুফ আজহারের স্ত্রী। জইশের বাহাওয়ালপুর শিবিরে অপারেশন ‘সিঁদুর’-এ ইউসুফ আজহার নিহত হওয়ার পর তার পরিবারও সংগঠনের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে শুরু করে।
গত ৮ অক্টোবর মাসুদ আজহার আনুষ্ঠানিকভাবে জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা ব্রিগেড গঠনের ঘোষণা দেন। পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে ‘দুখতারান-ই-ইসলাম’ নামে অনুষ্ঠানে প্রথম পর্যায়ে বেশ কয়েকজন নারী সদস্য সংগঠনে অন্তর্ভুক্ত হন। নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয় সাদিয়া আজহারকে। পরে যোগ দেন আফিরা বিবি।
গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, এই মহিলা শাখা মুসলিম নারীদের মধ্যে জইশ-এর মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি চরমপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি শেখানোর কাজ করছে। সংগঠনটি নারী ক্ষমতায়নের আড়ালে ধর্মীয় শিক্ষা ও সামাজিক কার্যক্রমের ছদ্মবেশে নারী জঙ্গি নিয়োগ করছে।
জামাত-উন-মোমিনাত সম্প্রতি অনলাইনে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চালু করেছে, যার নাম ‘তুফাত আল-মোমিনাত’। এই কোর্সে নারী সদস্যদের শেখানো হচ্ছে তথাকথিত “জিহাদের দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর কর্তব্য”। জানা গেছে, জইশ কমান্ডারদের পরিবারের নারী সদস্যরাও এই কোর্সের অংশ।
গোয়েন্দা তদন্তে জানা গেছে, দিল্লির লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় আই-২০ গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় এই মহিলা শাখার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। ঘটনায় ১২ জন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। তদন্তে গ্রেপ্তার হন লখনউয়ের বাসিন্দা ডা. শাহিন শাহিদ, যিনি ভারতে জইশের স্থানীয় ইউনিট প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি অ্যাসল্ট রাইফেল ও গুলি।
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বিস্ফোরকভর্তি গাড়ি দিয়ে সিআরপিএফের কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়, যাতে প্রাণ হারান ৪০ জন জওয়ান। সেই হামলার মূল ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন ইউসুফ আজহার, যিনি পরে দাচিগাম জাতীয় উদ্যানে ভারতীয় বাহিনির অভিযানে নিহত হন।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস
