রিয়ানের স্বামীর আত্মহত্যার কথা শুনে আবেগাপ্লুত প্রিন্স উইলিয়াম
আত্মহত্যা প্রতিরোধে ১৬ কোটি টাকার নেটওয়ার্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯:৪৫, ১০ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:২১, ১১ অক্টোবর ২০২৫

প্রিন্স উইলিয়াম কার্ডিফে রিয়ান ম্যানিংসের বাড়িতে। ছবি: কেনসিংটন প্যালেস
প্রিন্স অব ওয়েলস উইলিয়াম সম্প্রতি কার্ডিফে রিয়ান ম্যানিংস নামের এক নারীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন—যিনি তার স্বামীর আত্মহত্যার পর থেকে শোকাহত পরিবারদের পাশে দাঁড়ানোর কাজ করছেন। এই সাক্ষাতে উইলিয়াম নিজেই দৃশ্যত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং এক পর্যায়ে কথাও থেমে যায় তার।
রিয়ান ম্যানিংস জানান, তাদের এক বছরের শিশুপুত্র মারা যাওয়ার মাত্র পাঁচ দিন পরই তার স্বামী আত্মহত্যা করেন। সেই ভয়াবহ ক্ষতির পর তিনি দুই সন্তানকে মানুষ করেছেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘টুউইশ’ নামে একটি সহায়তামূলক সংস্থা, যা হঠাৎ বা আকস্মিকভাবে সন্তান হারানো পরিবারগুলোর পাশে থাকে।
রয়্যাল ফাউন্ডেশনের ১৬ কোটি টাকা সহায়তা
প্রিন্স উইলিয়ামের রয়্যাল ফাউন্ডেশন সম্প্রতি ঘোষণা করেছে যে তারা তিন বছরের জন্য ১৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা (এক মিলিয়ন পাউন্ড) সহায়তা দেবে ‘ন্যাশনাল সুইসাইড প্রিভেনশন নেটওয়ার্ক’ গঠনের জন্য। এই নেটওয়ার্কটি যুক্তরাজ্যজুড়ে কাজ করবে আত্মহত্যার মূল কারণগুলো বোঝা এবং আক্রান্ত পরিবারদের সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে।
প্রিন্স উইলিয়াম বলেন, “আমরা আত্মহত্যার মতো বেদনাদায়ক ও প্রতিরোধযোগ্য ট্র্যাজেডির বিরুদ্ধে একটি সাহসী, ঐক্যবদ্ধ জাতীয় উদ্যোগ গড়তে চাই।”
এই নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকবে ২০টি প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে রয়েছে কার্ডিফের জ্যাক লুইস ফাউন্ডেশন ও জেমস প্লেস, যারা মানসিক স্বাস্থ্যসেবা ও আত্মহত্যাপ্রবণ পুরুষদের বিনামূল্যে পরামর্শ দেয়।
রিয়ান তার গল্প শোনাতে গিয়ে বলেন, “আমি প্রতিদিন নিজেকে জিজ্ঞেস করি—‘তুমি কেন আমার সঙ্গে কথা বললে না?’ কারণ আমরা হয়তো ঠিকই থাকতাম।”
প্রিন্স উইলিয়াম এ সময় নীরব হয়ে পড়েন, চোখে জলও চলে আসে। তিনি বলেন, “দুঃখিত, প্রশ্নগুলো করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”
রিয়ান উত্তর দেন, “আপনিও তো প্রিয়জন হারিয়েছেন। জীবন মাঝে মাঝে ভয়ঙ্কর বাঁক নেয়। কিন্তু কথা বলা, আশার আলো খোঁজা—এটাই টিকে থাকার উপায়।”
এই উদ্যোগটি বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস এর প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। প্রিন্স উইলিয়াম দীর্ঘদিন ধরে যুবসমাজের মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছেন এবং বিশ্বাস করেন, “প্রত্যেক জীবনই বাঁচানোর মতো মূল্যবান।”
বিশেষজ্ঞ প্রফেসর অ্যান জন, যিনি এই নতুন নেটওয়ার্কের চেয়ার, বলেছেন—“আত্মহত্যা প্রতিরোধ একটি জটিল বিষয়, এর কোনো একক সমাধান নেই। তবে সহযোগিতা, বোঝাপড়া এবং সাহচর্যই এর মূল শক্তি।”
সূত্র : বিবিসি