ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চালিয়ে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:০৯, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১৯:৫৪, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় যুদ্ধবিরতি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যার মামলার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না—এ কথা স্পষ্ট করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা। গত মঙ্গলবার কেপটাউনের পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চলছে।
রামাফোসা বলেন, “যে শান্তি চুক্তি হয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান মামলার ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না। এই মামলা এখন এমন অবস্থায় রয়েছে যেখানে ইসরায়েলকে আমাদের আবেদনের জবাব দিতে হবে। আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে তারা আদালতে নিজেদের অবস্থান উপস্থাপন করবে।”
দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজা উপত্যকায় গণহত্যার অভিযোগ এনে আইসিজেতে মামলা করে। ২০২৪ সালের অক্টোবরে দেশটি আদালতে ৫০০ পৃষ্ঠার একটি বিস্তারিত আবেদন জমা দেয়। সেই আবেদনের জবাব দিতে ইসরাইলকে ১২ জানুয়ারি ২০২৬-এর মধ্যে লিখিত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। এরপর মৌখিক শুনানি হবে ২০২৭ সালে এবং চূড়ান্ত রায় ২০২৭ সালের শেষ দিকে বা ২০২৮ সালের প্রথম দিকে ঘোষিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ পর্যন্ত আইসিজে তিনটি অস্থায়ী নির্দেশ জারি করেছে। এতে ইসরায়েলকে গাজায় মানবিক সহায়তা অবাধে প্রবেশ করতে দেওয়া, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং গণহত্যা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল এসব নির্দেশ মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় অন্তত ৬৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়েছে এবং হাসপাতালসহ বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা মনে করি, যুদ্ধবিরতি যেমন জরুরি, তেমনি ন্যায়বিচারও অপরিহার্য। যারা গণহত্যার শিকার হয়েছে, তাদের জন্য আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার নিশ্চিত করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
জাতিসংঘের অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ ‘এক্স’ (আগের টুইটার)-এ এক প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, “ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা, ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের নিশ্চয়তা ছাড়া শান্তি কখনো টেকসই হয় না।”
সূত্র: আল-জাজিরা