যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া জেলেনস্কির
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯:০১, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাব বিষয়ে আলোচনায় “উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি” হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শান্তিদূত স্টিভ উইটকফ এবং প্রেসিডেন্টের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ ফোনালাপে তিনি আলোচনার ইতিবাচক অগ্রগতি তুলে ধরেন।
জেলেনস্কি বলেন, আলোচনায় মূলত রাশিয়াকে ভবিষ্যৎ যেকোনো শান্তিচুক্তি মানতে বাধ্য করার উপায় এবং যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা নিশ্চিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলেনস্কি তার এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, “আমরা রক্তপাত বন্ধে এবং নতুন করে পূর্ণমাত্রার হামলা প্রতিরোধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সৎভাবে কাজ চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।”
এই আলাপের সময় মিয়ামিতে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারাও যুক্ত ছিলেন, যেখানে টানা তৃতীয় দিনের মতো যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনার বৈঠক চলছে।
কোনো ধরনের ছাড় না দিয়ে রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর আবারও ব্যাপক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ জানায়, শুক্রবার রাতে রাশিয়া ৬৫৩টি ড্রোন ও ৫১টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে।
একটি হামলায় কিয়েভের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ফাস্টিভের প্রধান রেলস্টেশন ধ্বংস হয়ে যায়। দেশের আটটি অঞ্চলে বিদ্যুৎবহির্ভূত অবস্থার কথা জানিয়েছে ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয়।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, ফ্রান্স ‘পূর্ণ সংহতি’ নিয়ে ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। তিনি জানান, সোমবার লন্ডনে জেলেনস্কি, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এবং জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্কৎসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে তিনি যোগ দেবেন—যেখানে যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সমর্থন নিয়ে আলোচনা হবে।
দুই সপ্তাহ আগে একই চার নেতা ভার্চুয়াল আলোচনায় ইউক্রেনে সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতির পর একটি ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, “ইউক্রেন তার ভবিষ্যৎ নিজেই নির্ধারণ করবে। আমাদের শান্তিরক্ষী বাহিনী তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অবশ্য এ ধারণাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর ভাষায়, “যে কোনো বিদেশি বাহিনী ইউক্রেনের মাটিতে প্রবেশ করলে তা বৈধ লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠবে।”
মস্কোতে যুক্তরাষ্ট্র–ইউক্রেন আলোচনায় তেমন কোনো সাফল্য না মিললেও ফ্লোরিডায় চলমান তৃতীয় দিনের বৈঠক থেকে কিছু আশাব্যঞ্জক খবর এসেছে।
ট্রাম্পের শান্তিদূত স্টিভ উইটকফ এবং ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা প্রধান রুস্তেম উমেরভ এক যৌথ বিবৃতিতে জানান—দুই পক্ষ যুদ্ধোত্তর নিরাপত্তা কাঠামোর একটি ফ্রেমওয়ার্কে একমত হয়েছে এবং “দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধ সক্ষমতা” নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তবে শেষ সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর—বিবৃতি অনুযায়ী, “রাশিয়া যদি প্রকৃত অর্থে উত্তেজনা কমাতে ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধে পদক্ষেপ নেয়, তাহলেই শান্তির পথ খুলবে।”সূত্র: বিবিসি
