রাজবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত কবরস্থানে নাশকতা
রাজবাড়ী প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬:২০, ৭ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত কবরস্থানে নাশকতা। ছবি: সংগৃহীত
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুরের তারাপুর এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে দুর্বৃত্তরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। বিজয়ের মাসে এ ধরনের ঘটনার ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা সমাজসহ স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) ভোররাতে কবরস্থানের বাঁশের বেড়ায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়লেও স্থানীয়দের তৎপরতায় বড় ধরনের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়।
কবরস্থানের কেয়ারটেকার ও স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন শহিদুল ইসলাম জানান, “ফজরের আজান দিতে যাওয়ার সময় দেখি পুরো বেড়ায় ধোঁয়া উঠছে। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিই। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও হেফজখানার শিক্ষার্থীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।”
তিনি আরও বলেন, কবরস্থানে বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই এবং জায়গাটি রাস্তা থেকে একটু ভেতরে। ফলে এটি পরিকল্পিত নাশকতা বলেই তাদের ধারণা।
কবরস্থানের সেক্রেটারি শিক্ষক নুরুল আলম বলেন, “এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কমিটির পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হবে। প্রশাসনকেও জানানো হয়েছে।”
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সমশের আলী বলেন,“দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি, এখন আমাদের কবরস্থানও নিরাপদ নয়! ৭১–এর পরাজিত শক্তিরাই এমন ন্যক্কারজনক কাজের সঙ্গে জড়িত বলে মনে করি।”তিনি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
পাংশা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সদস্য সচিব সাবেক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম খান জাহাঙ্গীর বলেন,“মুক্তিযোদ্ধাদের কবরেও এখন নাশকতা চালানো হচ্ছে। এর বিচার না হলে ভবিষ্যতে মুক্তিযোদ্ধা সম্মানই বিলীন হয়ে যাবে। বিজয়ের মাসে এমন ঘটনা অকল্পনীয়।”
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সজীব হোসেন জানান, ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিফাতুল হক বলেন,“ক্ষতিগ্রস্ত কবরস্থান পরিদর্শন করেছি। খুব দ্রুতই দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।”
