কেট মিডলটনের সতর্কবার্তা
ডিজিটাল সংযোগের যুগে বাড়ছে মানসিক বিচ্ছিন্নতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:০৫, ৯ অক্টোবর ২০২৫

ব্রিটেনের প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেট মিডলটন সতর্ক করেছেন—অতিরিক্ত স্মার্টফোন ও কম্পিউটার স্ক্রিনের ব্যবহার পারিবারিক জীবনে “বিচ্ছিন্নতার মহামারি” সৃষ্টি করছে।
হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের অধ্যাপক রবার্ট ওয়ালডিঙ্গারের সঙ্গে যৌথভাবে রচিত দ্য পাওয়ার অব হিউম্যান কানেকশন ইন এ ডিসট্রাকটেড ওয়াল্ড“প্রবন্ধে কেট লিখেছেন, “ডিজিটাল ডিভাইস আমাদের সংযুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়, কিন্তু বাস্তবে তা প্রায়ই বিপরীত কাজ করে।”
তিনি বলেন, “আমরা শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকলেও মানসিকভাবে অনুপস্থিত, আমাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে প্রকৃত সংযোগ হারিয়ে ফেলছি।”
পরিবারে ভালোবাসা ও মনোযোগের অভাব
কেটের মতে, গবেষণায় প্রমাণিত—পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উষ্ণ ও স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক গড়ে তোলা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দীর্ঘমেয়াদে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণতবে বর্তমান সামাজিক বাস্তবতায় মানুষ আরও নিঃসঙ্গ ও একাকী হয়ে পড়ছে।
তিনি লিখেছেন, “যখন আমরা পারিবারিক আড্ডার সময় ফোন দেখি, সন্তানদের সঙ্গে খেলার সময় ই-মেইলের উত্তর দিই—তখন আমরা কেবল মনোযোগ হারাই না, ভালোবাসার মৌলিক প্রকাশ থেকেও নিজেদের দূরে সরিয়ে নিই।”
শিশুদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
প্রিন্সেস কেট উল্লেখ করেন, আজকের শিশুরা এমন এক জগতে বেড়ে উঠছে যেখানে প্রযুক্তি সর্বত্র ছড়িয়ে আছে। এ অবস্থায় তাদের সামাজিক ও আবেগিক দক্ষতা বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “আমরা এমন এক প্রজন্ম গড়ে তুলছি যারা ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ‘সংযুক্ত’, অথচ সবচেয়ে বেশি নিঃসঙ্গ, একাকী এবং অর্থবহ সম্পর্ক গড়তে অদক্ষ।”
প্রিন্স উইলিয়াম সম্প্রতি অ্যাপল টিভি প্লাসের এক অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, তাদের তিন সন্তানকেই এখনো স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি।
মানবিক সংযোগের শক্তিই জীবনের ভিত্তি
২০২১ সালে প্রতিষ্ঠিত রয়্যাল ফাউন্ডেশন সেন্টার ফর আর্লি চাইল্ডহুড—এর ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রবন্ধে কেট জোর দিয়েছেন, শিশুদের প্রথম বয়সে সম্পর্ক, ভালোবাসা ও মনোযোগই তাদের সারাজীবনের মানসিক স্বাস্থ্যের ভিত্তি গড়ে দেয়।
তিনি বলেন, “আমাদের জীবন তখনই বিকশিত হয়, যখন আমরা ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের বন্ধন লালন করি। এখন একে অপরের মূল্য উপলব্ধি করা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি জরুরি।”