নতুন ৪ মৃত্যুর তিনজনই মেয়ে
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনুপাতে মেয়েদের মৃত্যু বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯:৪৬, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

দেশে এবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত অনুপাতে মেয়েদের মৃত্যু বেশি। এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের ৩৯ শতাংশ মেয়ে রোগী। অথচ মেয়েদের মৃত্যুর হার ৪৭ শতাংশ।
অন্যদিকে, ছেলেরা আক্রান্ত বেশি হলেও সে অনুপাতে তাদের মৃত্যু হার কম। এখন পর্যন্ত ছেলেরা আক্রান্ত হয়েছে ৬১ শতাংশ। কিন্তু মারা গেছে ৫৩ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (১৫ অক্টোবর) বুলেটিনের সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আক্রান্ত হওয়ার পর মেয়েদের হাসপাতালে আনতে বা চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হয়ে যায়। আক্রান্ত হওয়ার পরও তারা বাসায় চিকিৎসা নেন। অবস্থা যখন গুরুতর হয় তখন হাসপাতালে আনা হয়। এতে মেয়েদের মৃত্যু ঝুঁকি বেড়ে যায় ও মারা যায়।
এমন অবস্থায় গত ২৪ ঘন্টায় (বুধবার সকাল আটটা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আরও চারজন মারা গেছে। তাদের তিনজনই নারী ও একজন পুরুষ। মারা যাওয়া তিন নারীর মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক কন্যাশিশু রয়েছে। অন্য দুই নারীর বয়স যথাক্রমে ৩৫ বছর ও ৮০ বছর। মারা যাওয়া একমাত্র পুরুষের বয়স ৬০ বছর।
মৃতদের দুইজন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাসপাতালে ও একজন বরগুণায় চিকিৎসা নিচ্ছিল।
অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে আরও ৭৫৮ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে এবছর মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৭ হাজার ১৫ জন। তাদের মধ্যে এ মাসের ১৫ দিনে ভর্তি হয়েছে ৯ হাজার ৬৭৩ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগীদের মধ্যে ২০২ জনই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর বাইরে ঢাকা বিভাগে ১৫৮ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৫ জন, বরিশাল বিভাগে ১৩৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৫০ জন, খুলনা বিভাগে ৬২ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৭ এবং সিলেট বিভাগে ২ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে এ মাসের ১৫ দিনে মারা গেছে ৪৪ জন।
এ বছর এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে সেপ্টেম্বরে ১৫ হাজার ৮৬৬ জন ও মারাও গেছে সবচেয়ে বেশি ৭৬ জন। এর আগে জুলাই মাসে ১০ হাজার ৬৮৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। এ ছাড়া জানুয়ারিতে ১১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন, মে মাসে ১৭৭৩ জন, জুন মাসে ৫ হাজার ৯৫১ জন এবং আগস্টে ১০ হাজার ৪৯৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে।
জুলাই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। তার আগে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে তিনজন, এপ্রিলে সাতজন, মে মাসে তিনজন, জুন মাসে ১৯ জন, আগস্টে ৩৯ জন মারা যায়। মার্চ মাসে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি।
দেশে ব্যাপকহারে প্রথম ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় ২০০০ সালে। সেবছর থেকেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডেঙ্গুর তথ্য সংরক্ষণ করছে। অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ি, এখন পর্যন্ত ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জনের মৃত্যুও হয় ওই বছর।