চাকসু ভোটে দুই কেন্দ্রের ভোট গণনা স্থগিত চায় দ্রোহ পর্ষদ
চবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২:০২, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২২:৪৫, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটে দুই কেন্দ্রের ভোট গণনা স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমর্থিত প্যানেল ‘দ্রোহ পর্ষদ’। প্যানেলটি এই দুই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণে অনিয়ম ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছে এবং সেগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ভোট গণনা স্থগিত চেয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিকালে চাকসু ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী ঋজু লহ্মী অবরোধ এ দাবি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, “আইটি ভবন কেন্দ্রে স্বাক্ষরবিহীন ২০টি ব্যালেট পাওয়া গেছে এবং বিবিএ ফ্যাকাল্টিতে ইসলামী ছাত্রী সংস্থার এক প্রার্থী ভোট কক্ষে প্রবেশ করে টোকেন বিলি করেছে। এসব অভিযোগ সমাধা না করে দুই কেন্দ্রের ভোট গননা স্থগিতের দাবি জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে ঋজু লহ্মী অবরোধ বলেন, “একদম শুরুতে আমরা নির্বাচন কমিশন অফিসকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, স্যার আমরা কি মাইক ব্যবহার করতে পারব কি না? তারা বলেছেন, কোন প্রকার মাইক ব্যবহার করা যাবে না। আমরা ব্যবহার করিনি। কিন্তু দেখলাম শিবির সমর্থিত প্যানেল কি মহাসমারোহে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করছেন। তখন কারো ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নাই। তার ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো ভূমিকা নেই। কিন্তু আমরা যখন কোনো কিছু করতে যাই, বারেবারে আমাদের বিরুদ্ধে কথা তোলা হয়।”
তিনটি হলে সভার জন্য অনুমতিপত্র দেওয়ার পরও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, “প্রতিটি হলে আমাদের বিলম্ব করানো হয়েছে। কিন্তু শিবির সমর্থিত প্যানেলের কোনো লেট হয়নি। তাহলে আপনারা প্রথম থেকেই বলে দিতেন, এই নির্বাচন আপনারা একটা প্যানেল নিয়ে করবেন। অন্য কোনো প্যানেল যেন নির্বাচন না করে।
এই ভিপি প্রার্থী আরও বলেন, “২৭ হাজার শিক্ষার্থীর প্রত্যেকে বিশ্বাস করেছিল, ৩৫ বছর পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। কোনো রকমের সংকটময় পরিস্থিতি হবে না। এই বিশ্বাস নিয়ে আমরা প্রত্যেকে যে সংকটগুলো আছে, দীর্ঘদিনের সেগুলোর সমাধান চেয়েছিলাম।”
কিন্তু সকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম দেখেছেন জানিয়ে ঋজু লহ্মী অবরোধ বলেন, “শুরুতে জিজ্ঞেস করেছিলাম অমোচনীয় কালি ব্যবহার করা হচ্ছে কি না। তারা বলেছেন, অমোচনীয় কালি দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভোট দেয়ার আধা ঘণ্টা পরে নিজের হাতে কোনো কালি আমি দেখি নাই। তখন আমি নির্বাচন কমিশন অফিসে জানালাম। তারা বলে যে, অমোচনীয় কালি আমরা আনতে পারি নাই। তখন আমরা জানলাম অমোচনীয় কালি তারা আনে নাই।”
আইটি ভবনে রিটার্নিং অফিসে স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট ব্যবহার করার কথা জেনেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রিটার্নিং অফিসারের স্বাক্ষরহীন ২০টি ভোট কাস্ট করা হয়েছে। অনেক ফ্যাকাল্টিতে ভোটারদের থেকে কোনো স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। বিবিএ ফ্যাকাল্টিতে ছাত্রী সংস্থার একজন কর্মী ভিতরে ঢুকে ভোটারদের প্রার্থীদের লিস্ট দিচ্ছেন। ভোট গ্রহণের সেন্টারের প্রধান দরজা সেখানে বন্ধ ছিল। যখন প্রশাসনকে বলেছি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। যখন বলেছি, তারা বলেছেন কী করব তোমরা বল? তারা যদি এতই অসহায় হয় তাহলে ৩৫ বছর পর এই প্রহসনের নির্বাচনের মানে কী?”
কেন্দ্রে ঢুকে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে যে প্রার্থী স্লিপ দিয়েছে, তার প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে ঋজু লহ্মী অবরোধ বলেন, “যেসব কেন্দ্রে এসব ঘটনা ঘটেছে, তার ভোট গণনা বন্ধ রাখতে হবে। যতক্ষণ এসব অভিযোগের সমাধান হবে না, ততক্ষণ ভোট গণনা হবে না; এই দাবি জানাতে চাই।”