বাম গণতান্ত্রিক জোট
মিরপুরে নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৩:০২, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:২৪, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদাম ও পোশাক কারখানা পরিদর্শন গিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটের বলেছেন, আগুনে পুড়িয়ে কাঠামোগতভাবে এই মানুষ হত্যার তদন্ত ও বিচার করতে হবে। নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
বাম জোটের নেতারা আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টায় মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডকবলিত কারখানা এলাকা পরিদর্শন করেন। তারা ভুক্তভোগী শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে কথা বলেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে নিয়োজিত ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের কাছ থেকে সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
বাম জোটের নেতারা বলেন, সরকার ও মালিকদের চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেখলাম আমরা আজকে এখানে এসে। আজ সকালেও পার্শ্ববর্তী কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা কাজে এলে বিষাক্ত গ্যাসে অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ে। এটা প্রমাণ করে এই রাষ্ট্র শ্রমজীবী জনগণকে কি দৃষ্টিতে দেখে!
তারা আরও বলেন, ঘনজনবসতিপূর্ণ আবাসিক এলাকায় কীভাবে রাসায়নিক গুদামের অনুমতি দেওয়া হয় তা আমাদের বোধগম্য নয়। তাজরীন, নিমতলী, চকবাজার, হাশেম ফুডসহ একের পর এক ট্র্যাজেডির পরও সরকার, প্রশাসন, কলকারখানা পরিদর্শক ও মালিকেরা তার থেকে কোন শিক্ষা নেয় না। আর যার ফলে মালিকদের মুনাফার আগুনে পুড়ে বারবার জীবন দিতে হচ্ছে দেশের শ্রমজীবী মানুষকে। আমরা এখানেও দেখলাম আগুন লাগার পর ছাদের গেটে তালা দিয়ে শ্রমিকদের জীবনকে বিপন্ন করা হলো। কোন সেফ এক্সিট কিংবা অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ছিল না বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। এর দায় কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর এড়াতে পারে না।
বাম জোটের নেতারা বলেন, এই এলাকার পার্শ্ববর্তী কারখানাগুলোতে তিন দিনের ছুটি ঘোষণা করে প্রত্যেক ভবনে নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করে কারখানা চালু করা হোক। তারা আরও দাবি করেন, প্রত্যেক নিহত শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে তাদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব সরকার ও মালিককে নিতে হবে। একই সঙ্গে এই ঘটনায় হতাহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করতে হবে, যথাযথ তদন্ত করে তার প্রতিবেদন জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে এবং এর সঙ্গে দায়ী মালিক ও প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
পরিদর্শন দলে ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ ক্বাফি রতন, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় সদস্য রাশেদ শাহরিয়ার, সমাজতান্ত্রিক পার্টির আব্দুল আলী, সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. সাজেদুল হক রুবেল, বাসদ ঢাকা মহানগর নেতা নাসির উদ্দিন প্রিন্স ও কমিউনিস্ট লীগের ঢাকা মহানগর নেতা ইকবাল কবিরসহ অন্য নেতারা।