বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

‘৩৩ গুণ বেশি দামে’ পণ্য ক্রয়

রেলের ১৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

​​​​​​​রাজশাহী প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২২:৩২, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ২৩:৫৪, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

রেলের ১৮ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

রাজশাহীতে রেলওয়ের (পশ্চিমাঞ্চল) প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ও বর্তমান ১৮ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. রোকনুজ্জামান বাদী হয়ে রাজশাহীর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সাবেক মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম; সাবেক সিওএস (পশ্চিম) খায়রুল আলম ও বেলাল হোসেন সরকার; সাবেক মহাব্যবস্থাপক মজিবুর রহমান; সাবেক এসিওএস জাহিদ কাওছার; সাবেক ডেপুটি সিসিএম ফুয়াদ হোসেন আনন্দ; সাবেক ডিএফএ শ্যামলী রাণী রায়, বর্তমান সিওএস (পূর্ব) আল আমিন তালুকদার; সাবেক এফএঅ্যান্ডসিএও শরিফুল ইসলাম; মসিহ উল হাসান, গোলাম রব্বানী, গোলাম রহমান, সরোজ কান্তি দেব, মিহির কান্তি গুহসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

তালা কেনায় ভয়াবহ অনিয়ম

দুদক সূত্র জানায়, রেলওয়ের জন্য প্রতিটি তালা কেনায় ঠিকাদারকে দেওয়া হয় ৫ হাজার ৫৯০ টাকা, অথচ বাজারদর ছিল মাত্র ১৭৩ টাকা। শুধু তালা কেনাতেই ১০ লাখ ৮৩ হাজার ৪০০ টাকার অনিয়ম ধরা পড়ে। একইভাবে ভিআইপি পর্দা কেনায় ৪৪ লাখ ৪১ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন সামগ্রী কেনাকাটায় আরও ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের দুর্নীতির চিত্র

দুদক জানায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সিওএস দপ্তরের মাধ্যমে তালা, বালতি, বাঁশি, ঝাণ্ডা, পর্দা, লাগেজ ফিতা, চেয়ার, ট্রলিসহ ১৭ ধরনের পণ্য কেনায় অস্বাভাবিক মূল্য দেখানো হয়। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের তদন্তে দেখা যায়, বাজার যাচাই ছাড়াই অস্বাভাবিক মূল্য নির্ধারণ করা হয় এবং বাজারদরের চেয়ে ১৫ থেকে ৩৩ গুণ বেশি দামে পণ্য কেনা হয়েছে। ফলে দুই কোটি ১৮ লাখ টাকার বেশি সরকারি অর্থ আত্মসাৎ হয়েছে বলে অনুসন্ধানে উঠে আসে।

দুদকের উপসহকারী পরিচালক রোকনুজ্জামান বলেন, “এই মামলার তদন্তের জন্য সর্বোচ্চ ১৮০ দিন সময় পাওয়া যাবে। এখনও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। কমিশন যাকে নিয়োগ করবে, তিনি তদন্ত করবেন।”

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ করে প্রকৃত মূল্যের ৩৩ গুণ বেশি দরে পণ্য ক্রয়ের পক্ষে সুপারিশ করেছিলেন, যা সরকারি অর্থ আত্মসাতের এক সুপরিকল্পিত উদাহরণ।

সম্পর্কিত বিষয়:

আরও পড়ুন