বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

বিশ্ব খাদ্য দিবসের ওয়েবিনারে বক্তারা

সঠিক খাদ্যাভ্যাসে কমে উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১:১৮, ১৬ অক্টোবর ২০২৫

সঠিক খাদ্যাভ্যাসে কমে উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি

সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব বলে এক ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন। তারা বলেছেন, অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের কারণে বাংলাদেশে উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন অসংক্রামক রোগ ও মৃত্যু ঝুঁকি ক্রমশ বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, খাবারে অতিরিক্ত লবণ এবং ট্রান্সফ্যাটের উপস্থিতি উচ্চ রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণযোগ্য ঝুঁকি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষে একদিন আগে বুধবার (১৫ অক্টোবর) এই ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। ‘খাদ্যাভ্যাস ও উচ্চ রক্তচাপ ঝুঁকি’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)। আয়োজনটির সহযোগিতায় ছিল গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই)। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য “হ্যান্ড ইন হ্যান্ড ফর বেটার ফুডস অ্যান্ড এ বেটার ফিউচার”।  

ওয়েবিনারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য তুলে ধরে জানানো হয়, পর্যাপ্ত ফল ও শাকসবজি না খাওয়ার কারণে ২০১৭ সালে বিশ্বে প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ মারা গেছেন। গবেষণা অনুযায়ী, স্বাস্থ্যকর খাবারের অংশ হিসেবে কম চর্বি, চিনি ও লবণযুক্ত খাবারের সাথে ফল ও শাকসবজি খেলে কিছু অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

ওয়েবিনারে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের (বিএফএসএ) সদস্য (খাদ্য শিল্প ও উৎপাদন) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শোয়েব জানান, ট্রান্সফ্যাট নিয়ন্ত্রণ প্রবিধানমালা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বিএফএসএ ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেলিং নিয়ে কাজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগ স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ ও অসংক্রামক রোগ মোকাবেলায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিউনিটি বেইজড হেলথ কেয়ারের (সিবিএইচসি) প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. গীতা রানী দেবী বলেন, “উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের গুরুত্ব নিয়ে আমরা কাজ করছি। কমিউনিটি পর্যায় থেকেই কাজটি শুরু করা উচিত এবং সেই অনুযায়ী পলিসি এডভোকেসির মাধ্যমে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করতে হবে।”  

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ইপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, “মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি এমন একটি পদ্ধতি বাস্তবায়ন করতে হবে যেন প্রক্রিয়াজাত খাবার কেনার আগে মানুষ বুঝতে পারে কোন খাবারে কতটা লবণ ও অন্যান্য উপকরণ আছে।”

ওয়েবিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম বলেন, “উচ্চ রক্তচাপসহ ও অন্যান্য অসংক্রামক রোগের প্রকোপ কমাতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস নিশ্চিতের পাশাপাশি জীবনাচরণে পরিবর্তন আনতে হবে।”

ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতিষ্ঠাকালীন চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার এবং জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস। 

ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের এবং ওয়েবিনারটি সঞ্চালনা করেন প্রজ্ঞা’র কোঅর্ডিনেটর সাদিয়া গালিবা প্রভা। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ ওয়েবিনারে অংশ নেন।

সম্পর্কিত বিষয়:

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন