খাসোগি হত্যার সাত বছর পর ওয়াশিংটনে সালমান–ট্রাম্প বৈঠক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫:১২, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ছবি: সংগৃহীত
সাত বছরের বেশি সময় পর যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আজ মঙ্গলবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠককে ঘিরে বৈশ্বিক রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু—তেলবাজারে দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব, নিরাপত্তা সহযোগিতা, বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, এবং বেসামরিক পারমাণবিক জ্বালানি প্রকল্প নিয়ে সম্ভাব্য অগ্রগতি।
২০১৮ সালে তুরস্কের ইস্তানবুলে সৌদি কন্সুলেটের ভেতরে সাংবাদিক ও সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগিকে হত্যার পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল, আর বিভিন্ন আন্তর্জাতিক তদন্তে যুবরাজের অনুমোদনের ইঙ্গিত ওঠে। পরে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার মূল্যায়নেও বলা হয়, সালমানই অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন। তবে তিনি সরাসরি নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন, কিন্তু সরকার প্রধান হিসেবে দায় স্বীকার করেন।
হোয়াইট হাউসের বৈঠকে মূল লক্ষ্য হচ্ছে দুই দেশের কয়েক দশকের পুরোনো নিরাপত্তা–জ্বালানি সম্পর্ককে আরও গভীর করা। সৌদি আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদনকারী দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি—দুই দেশের স্বার্থ তাই বহুমাত্রিকভাবে জড়িত।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের প্রতিশ্রুত ৬০ হাজার কোটি ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা বাস্তব রূপ দিতে চান ট্রাম্প। মানবাধিকার প্রসঙ্গে ট্রাম্পের নীরবতা এবারও অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
ইরান, ইয়েমেন ও লোহিত সাগর অঞ্চলের অস্থিরতার মধ্যে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নতুন নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চায়। পাশাপাশি যুবরাজ সালমান দেশের প্রযুক্তিভিত্তিক ‘ভিশন ২০৩০’ রূপদানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অংশীদারিত্ব এবং বেসামরিক পারমাণবিক জ্বালানি প্রকল্পে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চান।
দুই দেশের ঐতিহ্যগত সম্পর্ক—“সৌদি তেল সরবরাহ করবে, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা দেবে”—একবিংশ শতকের ভূরাজনীতিতে নতুন করে সংজ্ঞায়িত হচ্ছে। এবার তাতে যোগ হচ্ছে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও পারমাণবিক জ্বালানির আধুনিক অধ্যায়।
