তাইওয়ান উত্তেজনায় জাপানের জরুরি সতর্কতা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৬:২৯, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
চীন–তাইওয়ানকে ঘিরে বাড়তে থাকা কূটনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে চীনে অবস্থানরত নিজ দেশের নাগরিকদের জন্য বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে জাপান। সোমবার জারি করা দূতাবাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে—জাপানি নাগরিকদের ভিড়পূর্ণ এলাকা এবং এমন সব স্থান এড়িয়ে চলতে হবে, যেখানে তাদের জাতীয়তা সহজে চিহ্নিত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এই সতর্কতা এসেছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির সাম্প্রতিক তাইওয়ান–সংক্রান্ত মন্তব্যের পর। তাকাইচি পার্লামেন্টে বলেন—তাইওয়ানে যুদ্ধাবস্থা শুরু হলে তা জাপানের অস্তিত্বের ওপর সরাসরি হুমকি তৈরি করতে পারে, ফলে জাপান সীমিত সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার আইনগত অধিকার রাখে।
চীনের তীব্র প্রতিবাদ ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ
বেইজিং তাকাইচির মন্তব্যে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায়।চীনা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি করে। জাপানি রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হয়। ওসাকার চীনা কনসুল জেনারেল সিউ জিয়ান সামাজিক মাধ্যমে তাকাইচিকে সরাসরি হুমকি দেন।উত্তরে টোকিওও চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানায়।
জাপানের পরামর্শে বলা হয়েছে—স্থানীয় সংস্কৃতি ও রীতিনীতি সম্মান করতে হবে,স্থানীয়দের সঙ্গে কথাবার্তায় সংযম থাকতে হবে,উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি এড়িয়ে চলতে হবে।
জাপানি মুখপাত্র মিনোরু কিহারা বলেন, “চীনের রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও সামাজিক পরিস্থিতির পূর্ণ মূল্যায়ন করেই এই নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।”
বাজারে প্রভাব: শেয়ারবাজারে বড় ধস
কূটনৈতিক টানাপোড়েন সরাসরি প্রভাব ফেলেছে জাপানের অর্থনীতিতে।মঙ্গলবার জাপানের শেয়ারবাজার ৩ শতাংশ পর্যন্ত পড়ে যায়।চীন নাগরিকদের জাপান–ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়ায় পর্যটন ও খুচরা খাতের শেয়ার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সঙ্গে জাপানের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কের কারণে চাপ বাড়তে পারে
২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে প্রায় ৭.৫ মিলিয়ন চীনা পর্যটক জাপান সফর করেছেন—যা জাপানের পর্যটন আয়ের বড় অংশ।
চীন বহুদিন ধরে তাইওয়ানকে নিজের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে এবং প্রয়োজনে বলপ্রয়োগের হুমকিও দিয়েছে। জাপানের নতুন প্রধানমন্ত্রী তাকাইচি শুরু থেকেই চীনের সামরিক সম্প্রসারণ সমালোচনা করে আসছেন। তাঁর বক্তব্য বেইজিং–টোকিও সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলেছে বলে কূটনৈতিক মহল মনে করছে।
