পাক–আফগান উত্তেজনায় উদ্বেগ ইরান–কাতারের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ০৭:০৬, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
পাকিস্তান–আফগানিস্তান সীমান্তে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইরান ও কাতার। দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর টেলিফোন আলাপে পাকিস্তান–আফগানিস্তানের চলমান সংকট প্রশমনে আঞ্চলিক দেশগুলোকে গঠনমূলক ভূমিকা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ আব্বাস আরাঘচি এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ আল থানি টেলিফোনে কথা বলেন। আলোচনায় তারা পাকিস্তানের ভেতরে সাম্প্রতিক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা ও আফগান সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

ইরান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, দুই মন্ত্রীই জোর দিয়ে বলেন, “আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সদিচ্ছা ও কূটনৈতিক ভূমিকা অত্যন্ত প্রয়োজন।”
গত সপ্তাহে পাকিস্তানে দুটি বড় হামলা দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আবারও নাজুক করে তুলেছে।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের ক্যাডেট কলেজ ওয়ানায় সশস্ত্র হামলার ঘটনায় পাকিস্তানি বাহিনীর অভিযানে সকল ‘ফিতনা আল–খাওয়ারিজ’ (টিটিপি) জঙ্গি নিহত হয়।
একই দিনে ইসলামাবাদ জেলা জুডিশিয়াল কমপ্লেক্সে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১২ জন নিহত ও অন্তত ৩৬ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে আইনজীবী ও মামলার বাদী–বিবাদীরা ছিলেন।
এই হামলাগুলোর সূত্র ধরে ইসলামাবাদ ও কাবুলের সম্পর্ক আরও শীতল হয়ে গেছে। পাকিস্তান দাবি করছে, নিষিদ্ধ তেহরিক–ই–তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) অনেক হামলার দায় আফগান ভূখণ্ডের অস্থিতিশীলতার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
আরাঘচি ও থানি গাজা উপত্যকার সর্বশেষ পরিস্থিতিও আলোচনা করেন। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন খসড়া প্রস্তাব নিয়ে তারা উদ্বেগ জানান এবং ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার রক্ষার বিষয়ে অবস্থান তুলে ধরেন।
এর আগে ১২ নভেম্বর রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি যৌথ বিবৃতিতে পাকিস্তান–আফগানিস্তানের মধ্যে আলোচনার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেন।
তাদের আলোচনায় উঠে আসে—কাতার ও তুরকিয়ার মধ্যস্থতায় কাবুল ও ইসলামাবাদের মধ্যে পারস্পরিক যুদ্ধবিরতি, সীমান্তে গুলি বিনিময় বন্ধে পৃথক চুক্তি, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পন্থায় দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের আহ্বান।
লাভরভ–আরাঘচির আলোচনায় মধ্যপ্রাচ্যের সর্বশেষ পরিস্থিতি, বিশেষ করে ফিলিস্তিন–ইসরায়েল উত্তেজনা এবং জাতিসংঘের আলোচনার বিষয়গুলোও গুরুত্ব পায়।
দুই দেশই ঘোষণা করেছে, তাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত ট্রিটি অন কমপ্রিহেনসিভ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ–এর শর্তাবলি বাস্তবায়ন এখন তাদের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম অগ্রাধিকার।
