ট্রাম্প বক্তৃতা ‘বিকৃতি’ বিতর্কে বিবিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল রিফর্ম ইউকে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:৪২, ১২ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১৮:৪৪, ১২ নভেম্বর ২০২৫
বিবিসির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করল রিফর্ম ইউকে। ছবি: ইয়াহু নিউজ কানাডা
ব্রিটেনের ডানপন্থি রাজনৈতিক দল রিফর্ম ইউকে বিবিসির নতুন প্রামাণ্যচিত্র থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কারণ, সম্প্রতি বিবিসির প্যানোরামা অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারির বক্তৃতার অংশ সম্পাদনা করে এমনভাবে দেখানো হয় যাতে তিনি নাকি জনতাকে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসে হামলার জন্য উসকানি দিচ্ছেন—এমন ধারণা সৃষ্টি হয়।
বিতর্কের সূত্রপাত হয় যখন টেলিগ্রাফ পত্রিকা একটি অভ্যন্তরীণ বিবিসি মেমো প্রকাশ করে, যেখানে সম্পাদকীয় উপদেষ্টা মাইকেল প্রেসকট সতর্ক করে লিখেছিলেন—এই সম্পাদনা “ঘটনার বিকৃতি” ঘটিয়েছে এবং দর্শকরা এখন প্রশ্ন তুলতে পারেন, “বিবিসির ওপর কেন বিশ্বাস রাখব?”
এর ফলেই শুরু হয় বড়সড় প্রতিক্রিয়া। বিবিসির মহাপরিচালক টিম ডেভি এবং নিউজ বিভাগের প্রধান ডেবোরা টারনেস দুজনেই পদত্যাগ করেন। এমন অবস্থায় রিফর্ম ইউকে সিদ্ধান্ত নেয় যে, বিবিসির তৈরি হতে থাকা নতুন ডকুমেন্টারি দ্য রাইজ অফ রিফর্ম -এ তারা আর কোনো সহযোগিতা করবে না।
দলের অভ্যন্তরীণ ইমেইলে বলা হয়েছে, “আমরা স্পষ্ট করতে চাই—প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অক্টোবর ফিল্মস সব সময় পেশাদার আচরণ করেছে, তবে প্যানোরামা ডকুমেন্টারির ঘটনার পর বিবিসির প্রতি আমাদের আস্থা আর নেই।”
ইমেইলে আরও বলা হয়, দলের সদস্যদের অনুরোধ করা হয়েছে যেন তারা “বিনীতভাবে” ডকুমেন্টারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো চিত্রায়ণে অংশ না নেন এবং পূর্বে ধারণ করা ফুটেজ ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাহার করে নেন।
উল্লেখ্য, বিবিসি সাংবাদিক লরা কুন্সবার্গ–এর উপস্থাপনায় The Rise of Reform অনুষ্ঠানটি প্রচার হওয়ার কথা ছিল আগামী জানুয়ারিতে। এতে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের “অভূতপূর্ব অ্যাকসেস” দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দলটির প্রত্যাহারের পর এখন প্রামাণ্যচিত্রটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেও ঘোষণা দিয়েছেন যে, তিনি বিবিসির বিরুদ্ধে ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের মামলা করবেন যদি প্রতিষ্ঠানটি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চায় ও সম্পূর্ণ রিট্র্যাকশন না দেয়। বিবিসির চেয়ারম্যান সামির শাহ ইতোমধ্যে “ভুল সিদ্ধান্তের জন্য” দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
রিফর্ম ইউকে জানিয়েছে, তাদের লক্ষ্য “নির্ভরযোগ্য ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার সঙ্গে কাজ করা।” কিন্তু ট্রাম্প সম্পাদনা বিতর্কে “ভরসার সম্পর্ক ছিন্ন” হওয়ায় তারা এখন বিবিসির সঙ্গে আর কাজ করবে না।
