ট্রাম্পের ৫০ বছরের মর্টগেজ পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক, রিপাবলিকানদের প্রতিক্রিয়া
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:১৬, ১২ নভেম্বর ২০২৫
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: এসবিএস
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি প্রস্তাবিত ৫০ বছরের মর্টগেজ পরিকল্পনাকে “কোনো বড় বিষয় নয়” বলে মন্তব্য করেছেন। ফক্স নিউজের ‘দ্য ইনগ্রাহাম অ্যাঙ্গেল’ অনুষ্ঠানে সোমবার রাতে তিনি বলেন, “এর মানে শুধু এতটুকু—মাসিক কিস্তি কমবে, তবে সময়টা বাড়বে। এতে কারও খুব ক্ষতি বা উপকার হবে না, হয়তো সামান্য সাহায্য করবে।”
তবে ট্রাম্পের এই বক্তব্যে মার্কিন রক্ষণশীল মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কংগ্রেস সদস্য মারজোরি টেলর গ্রিন এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লিখেছেন, “আজীবন ঋণে জর্জরিত থাকুন!” ডানপন্থী কর্মী মাইক সারনোভিচও একে “লাইফটাইম মর্টগেজ” আখ্যা দিয়েছেন।
ফেডারেল হাউজিং ফাইন্যান্স এজেন্সি -এর পরিচালক বিল পুল্টে শনিবার এক পোস্টে জানান, তারা “৫০ বছরের মর্টগেজ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে।” তিনি আরও বলেন, সরকার ৫, ১০ ও ১৫ বছরের মর্টগেজের জন্যও ‘সহজ শর্তে রিলিফ’ দিতে কাজ করছে। তবে এর বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ডেভিস ইনগেল জানিয়েছেন, “সব সংস্থাই প্রেসিডেন্টের নীতি বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করছে,” এবং প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের ঘোষণা হোয়াইট হাউস থেকেই দেওয়া হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ির দাম মহামারির আগের তুলনায় এখন প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। ৩০ বছরের মর্টগেজের সুদহার সাম্প্রতিক সময়ে ৬.১৯ শতাংশে নেমে এলেও বাড়ি কেনা এখনো মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
অর্থনীতিবিদ ড্যারিল ফেয়ারওয়েদার (রেডফিন) সতর্ক করে বলেছেন, “৫০ বছরের ঋণের সুদহার ৩০ বছরের তুলনায় কেমন হবে, তা না জেনে এর সুবিধা বোঝা কঠিন। বাস্তবে এটি বাড়ি কেনার খরচ বাড়াতে পারে।”
টিডি সিকিউরিটিজের বিশ্লেষকরা বলেছেন, ৫০ বছরের ঋণ কার্যকর হতে কমপক্ষে এক বছর সময় লাগতে পারে, এবং এর সুফল পেতে হলে নির্মাণ খরচ কমাতে হবে। অন্যথায় এটি কেবল বাড়ির চাহিদা বাড়িয়ে দাম আরও উঁচু করবে।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন, তিনি খুব শিগগিরই বাড়ির মূল্য ও ক্রয়ক্ষমতা সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশ দিতে পারেন। হোয়াইট হাউসের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেটও বলেন, “বাড়ির দাম নিয়ন্ত্রণ এখন হোয়াইট হাউসের অগ্রাধিকার।”
বিশ্লেষকদের মতে, ৫০ বছরের মর্টগেজ চালু হলে রেডফিনের মালিকানা প্রতিষ্ঠান এর মতো কোম্পানিগুলো লাভবান হতে পারে।
তবে সাধারণ নাগরিকের জন্য এটি “আজীবন ঋণের ফাঁদে” পড়ার ঝুঁকি তৈরি করবে বলে সতর্ক করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থনীতিবিদদের মতে, “চাহিদা বাড়লেও সরবরাহ না বাড়লে এটি দীর্ঘমেয়াদে মার্কিন অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে।”
সূত্র: সিএনএন
