আরব বিশ্বের গর্ব অধ্যাপক ওমর ইয়াগি
শরণার্থী পরিবার থেকে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ: ১৮:১১, ৮ অক্টোবর ২০২৫

দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রাশিদ আল মাকতুম রসায়নে নোবেল পুরস্কার জয়ী অধ্যাপক ওমর ইয়াগির অর্জনকে আরব বিশ্বের জন্য ‘অসীম গর্বের উৎস’ বলে অভিহিত করেছেন। বুধবার (৮ অক্টোবর) ২০২৫ সালে ঘোষিত নোবেল পুরস্কারে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউসি বার্কলে) রসায়নবিদ অধ্যাপক ইয়াগি যৌথভাবে সম্মানিত হয়েছেন, তার গবেষণা ছিল “মেটাল–অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস” (Metal–Organic Frameworks) বিকাশে।
শেখ মোহাম্মদ এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) লিখেছেন,“এক বছর আগে আমরা প্রফেসর ওমর ইয়াগিকে আরব জিনিয়াস অ্যাওয়ার্ডে সম্মান জানিয়েছিলাম, আর আজ তিনি নোবেল জয় করেছেন। আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই—আর তার চেয়েও বড় কথা, আমরা গর্ব করি আরব বিশ্বের এই মহান মেধাবীদের নিয়ে।”
তিনি আরও বলেন,“আরব জাতি প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তায় পরিপূর্ণ। আমাদের কাজ হলো নিজেদের, আমাদের তরুণ প্রজন্মের এবং আমাদের বিজ্ঞানীদের প্রতি আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা। এটাই আমাদের আরব জিনিয়াস অ্যাওয়ার্ডের লক্ষ্য এবং আমাদের মানবিক ও বৌদ্ধিক প্রচেষ্টার বার্তা।”
শরণার্থী পরিবার থেকে নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী
শরণার্থী পরিবারে জন্ম নেওয়া ওমর ইয়াগি একসময় শরণার্থী শিবিরের শিশু ছিলেন। সেই দুর্দিন পেরিয়ে তিনি আজ বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানীদের একজন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক হিসেবে তিনি রসায়নের এক নতুন শাখা—‘রেটিকুলার কেমিস্ট্রি’র জনক হিসেবে পরিচিত।
তার গবেষণায় উদ্ভাবিত মেটাল–অর্গানিক ফ্রেমওয়ার্কস এখন ব্যবহার হচ্ছে বায়ুমণ্ডল থেকে পানি আহরণ, কার্বন ডাই-অক্সাইড ধারণ এবং বিষাক্ত গ্যাস সংরক্ষণের মতো প্রযুক্তিতে।
ইয়াগির প্রকাশিত গবেষণাপত্রের সংখ্যা ৩০০টিরও বেশি, আর তার কাজের উদ্ধৃতি (citation) এখন ২ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি — যা বৈজ্ঞানিক জগতে এক বিরল রেকর্ড।
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান হেইনার লিঙ্কে বলেন,“তারা এমন এক শ্রেণির পদার্থ তৈরি করেছেন, যেগুলোর অভ্যন্তরে বিশাল ফাঁকা জায়গা থাকে—হোটেলের কক্ষের মতো—যেখানে গ্যাসের অণু প্রবেশ করতে পারে ও বের হয়ে আসতে পারে। খুব অল্প পরিমাণ এই উপাদান বিশাল পরিমাণ গ্যাস সংরক্ষণে সক্ষম, যেন হারি পটারের হারমায়োনির ব্যাগ।”
এই বছরের নোবেল পুরস্কারের আর্থিক মূল্য ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা (প্রায় ১.২ মিলিয়ন ডলার)। ওমর ইয়াগির সঙ্গে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন জাপানের সুসুমু কিতাগাওয়া এবং অস্ট্রেলিয়ার রিচার্ড রবসন।
এই জয় শুধু এক বিজ্ঞানীর সাফল্য নয়, বরং পুরো আরব বিশ্বের আত্মবিশ্বাস ও সৃজনশীলতার প্রতীক হয়ে উঠেছে।