বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫

| ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও বন্ধ্যাত্ব ঝুঁকি শনাক্ত হতে পারে

এআই প্রযুক্তির নতুন দ্বার উন্মোচন  

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭:৩১, ৮ অক্টোবর ২০২৫

এআই প্রযুক্তির নতুন দ্বার উন্মোচন  

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) চিকিৎসকরা এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), জিনগত তথ্য এবং ভবিষ্যদ্বাণীমূলক স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রোগ শনাক্তকরণে নতুন দিগন্ত খুলছেন। লক্ষ্য—হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা ও প্রজননজনিত সমস্যা রোগ দেখা দেওয়ার বহু বছর আগেই শনাক্ত করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি জীবন বাঁচাতে পারে, তবে এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে নৈতিক ও কাঠামোগত চ্যালেঞ্জও।

“ডায়াগনোসিং বিফোর সিম্পটমস”— রোগের আগে রোগ ধরা
‘ফিউচার অব হেলথকেয়ার সামিট ২০২৫’-এর আলোচনায় ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের মেডিকেল ডিরেক্টর ড. সামের এল্লাহাম বলেন, ভবিষ্যদ্বাণীমূলক চিকিৎসা মানে শুধু তথ্য নয়, মানসম্পন্ন তথ্য। “খারাপ ডেটা দিয়ে ভালো ফল পাওয়া যায় না। যেমন পুড়ে যাওয়া ভুট্টা দিয়ে ভালো পপকর্ন তৈরি হয় না,”—তুলনা টেনে তিনি বলেন।
তিনি জোর দেন, চিকিৎসা ব্যবস্থাকে প্রশাসনিক থেকে রোগীকেন্দ্রিক মডেলে রূপান্তর করতে হবে। সেন্সর, ওয়্যারেবল ডিভাইস, এবং ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড একত্রিত হলে তবেই কার্যকর পূর্বাভাস সম্ভব।

ওয়্যারেবল ডিভাইস ও বায়োমেট্রিক পর্যবেক্ষণ
ড. এল্লাহাম ব্যাখ্যা করেন, স্মার্টওয়াচ বা বায়োমেট্রিক ট্র্যাকারগুলোর তথ্য চিকিৎসকদের আগেভাগে সতর্ক করতে পারে—রোগীর হৃদরোগ বা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি চিহ্নিত হওয়ার আগেই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, “এটি প্রতিক্রিয়াশীল নয়, প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যাওয়া,”।

ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে নতুন দিগন্ত
মেটাবলিকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ড. ইহসান আলমারজুকি জানান, এআই-ভিত্তিক ভবিষ্যদ্বাণীমূলক প্রযুক্তি ডায়াবেটিস চিকিৎসায় বিপ্লব এনেছে। আগে যেখানে করোনারি ক্যালসিয়াম স্কোর জানতে ব্যয়বহুল সিটি স্ক্যান লাগত, এখন তা রেটিনা স্ক্যানের মাধ্যমেই করা যাচ্ছে।
“আমরা এটি এক বছর ধরে চালাচ্ছি—অল্প খরচে, কোনো আঘাত ছাড়াই রোগীর ঝুঁকি জানা যাচ্ছে,”—তিনি বলেন।

প্রজনন চিকিৎসায় নৈতিক প্রশ্ন

অর্চিড ফার্টিলিটির মেডিকেল ডিরেক্টর ড. পার্থ দাস জানান, জেনেটিক ঝুঁকি শনাক্তের ফলে অনেক দম্পতি আগেভাগেই সন্তান জন্মের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছেন। এতে একদিকে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হলেও, অন্যদিকে নৈতিক দোটানার সৃষ্টি হচ্ছে।
ড. দাস বলেন, “এই পরীক্ষা জীবন বাঁচাতে পারে, কিন্তু পরিবারকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখাও জরুরি”।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, বীমা নীতিমালা, চিকিৎসকদের মানসিক প্রতিরোধ এবং পুরনো গাইডলাইন এসব প্রযুক্তির প্রসারে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ড. এল্লাহামের ভাষায়—“যতদিন পর্যন্ত হাসপাতাল ভর্তি করলেই বীমা বেশি পরিশোধ করবে, ততদিন প্রতিরোধমূলক প্রযুক্তি অব্যবহৃতই থেকে যাবে।”

এআই, জেনেটিক টেস্টিং, ও ধারাবাহিক স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ একত্রে রোগী ও চিকিৎসককে সমানভাবে ক্ষমতাবান করে তুলতে পারে। তবে এজন্য প্রয়োজন আধুনিক নীতিমালা, প্রযুক্তি ইন্টিগ্রেশন এবং বীমা সংস্কার।
‘ইকোস অব টুমরো | বিল্ডিং দ্য ফিউচার অব কেয়ার’ শীর্ষক সম্মেলনে সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ নেতৃত্বরা এআই, ভবিষ্যদ্বাণীমূলক স্বাস্থ্যসেবা এবং প্রতিরোধমূলক চিকিৎসার নতুন যুগ নিয়ে মতবিনিময় করেন।

এ সম্পর্কিত খবর

আরও পড়ুন

শীর্ষ সংবাদ:

সন্ধ্যায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে বসছেন প্রধান উপদেষ্টা
সন্ধ্যায় ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে বসছে ঐকমত্য কমিশন
আমি নিজেই পিআর বুঝি না : মির্জা ফখরুল
অক্টোবরে বাড়ছে ট্রিপ সংখ্যা রবিবার থেকে ১ ঘন্টা বেশি চলবে মেট্রোরেল
সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে সই করবে : আইন উপদেষ্টা
ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ অবরোধ এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের
পুয়ের্তো রিকোর জালে মেসির আর্জেন্টিনার ৬ গোল
স্বাক্ষরবিহীন ব্যালট পেপার বিতর্কে তোলপাড়
চাকসু নির্বাচন অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়ার অভিযোগ
রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস
মিরপুরে অগ্নিকাণ্ডে ৯ জনের মৃত্যুতে প্রধান উপদেষ্টার শোক
মিরপুরের আগুন গার্মেন্টসের দ্বিতীয় তলা থেকে ৯ জনের লাশ উদ্ধার
হাসিনাকে ফেরাতে রেড নোটিশ জারির পদক্ষেপ
ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ১৯ অক্টোবরের মধ্যে এনিসিপিকে প্রতীক নিতে হবে
শিশুদের জন্য বিপজ্জনক ভারতের ৩ কফ সিরাপ : ডব্লিউএইচও
আগামী রবিবার থেকে মাসব্যাপী শিশু-কিশোরদের বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান শুরু