মুসলিম ঐতিহ্যের স্মরণে কানাডায় ইসলামিক হিস্ট্রি মাস
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭:৪৮, ৬ অক্টোবর ২০২৫

অক্টোবর জুড়ে কানাডায় পালিত হচ্ছে ইসলামিক হিস্ট্রি মাস। এ উপলক্ষে দেশ জুড়ে নানা কর্মসূচি চলছে। লেকচার, প্রদর্শনী ও আলোচনা সভার মাধ্যমে ইতিহাস, ঐতিহ্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিল্প-সংস্কৃতিতে মুসলিম সভ্যতার অবদানকে স্মরণ করা হচ্ছে।
কানাডিয়ান লেখক ও সম্প্রদায় নেতা মুনিব নাসির এক নিবন্ধে বলেছেন, অতীতের সাফল্য স্মরণ করার বিষয়টি মুসলমানদের আত্মপরিচয়কে জাগ্রত করে। বিশ্বাস, জ্ঞান, আধ্যাত্মিকতা ও সেবা যে একসূত্রে গাঁথা, তা এই ইতিহাসে প্রমাণিত। তবে একই সঙ্গে ইসলামিক হিস্ট্রি মান্থ কানাডার অভ্যন্তরীণ মুসলিম ইতিহাসকেও সামনে আনার সুযোগ।
তিনি উল্লেখ করেন, কানাডায় মুসলমানদের ইতিহাস শতাব্দী প্রাচীন। প্রবাস, সংগ্রাম ও নতুন দেশে প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার মধ্য দিয়েই মুসলিম সম্প্রদায়ের যাত্রা শুরু। ১৯৩৮ সালে এডমন্টনে প্রথম মসজিদ নির্মাণ এ যাত্রার গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। পরবর্তীতে সমাজ, শিক্ষা, অর্থনীতি ও নাগরিক জীবনের নানা ক্ষেত্রে মুসলমানরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
নাসির বলেন, ইতিহাস কেবল অতীতের নয়, এটি গড়ে ওঠে প্রতিটি প্রজন্মের হাতে। আজকের কানাডিয়ান মুসলমানরা নাগরিক কর্মকাণ্ড, দাতব্য কাজ, শিক্ষা-গবেষণা, ক্রীড়া ও শিল্প-সংস্কৃতিতে সক্রিয়ভাবে অবদান রেখে ভবিষ্যৎ কানাডা নির্মাণে ভূমিকা রাখছেন।
তিনি ইতিহাস সংরক্ষণের বাস্তব পদক্ষেপের ওপর জোর দেন। যেমন বয়োজ্যেষ্ঠদের অভিজ্ঞতা রেকর্ড করা, কমিউনিটির দলিলপত্র ও আলোকচিত্র সংরক্ষণ, জাতীয় আর্কাইভ ও জাদুঘরের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও শিল্পের মাধ্যমে সৃজনশীলভাবে ইতিহাস তুলে ধরা।
এই প্রসঙ্গে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম ইন কানাডা আর্কাইভস (এমআইসিএ)-এর উদ্যোগকে তিনি প্রশংসা করেন। প্রতিষ্ঠানটি মুসলমানদের উপস্থিতি ও অবদানের দলিল সংগ্রহ করছে। নাসিরের মতে, এ কাজকে সফল করতে সম্প্রদায়ের সক্রিয় সহযোগিতা অপরিহার্য।
তিনি সতর্ক করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইতিহাস সংরক্ষণের বিকল্প নয়। কয়েক সেকেন্ডে হারিয়ে যাওয়া ভিডিও বা পোস্ট দিয়ে প্রজন্মের সংগ্রামকে ধরে রাখা সম্ভব নয়। তাই প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আর্কাইভ ও গবেষণায় বিনিয়োগ জরুরি।
নাসির বলেন, ইসলামিক হিস্ট্রি মান্থ কেবল স্মরণ নয়, এটি কার্যত একটি আহ্বান। অতীতের শিক্ষাকে আজকে বাস্তবে প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিটি মসজিদ নির্মাণ, প্রতিটি অংশীদারিত্ব ও সেবামূলক কাজই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।
তিনি আহ্বান জানান, এ অক্টোবর মাস হোক অতীত স্মরণের পাশাপাশি নতুন ইতিহাস রচনার অঙ্গীকার।