দুই কেবলার মসজিদে ইসলামি ঐতিহ্য সংরক্ষণের উদ্যোগ
সমাজকাল ডেস্ক
প্রকাশ: ০০:২৪, ১২ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ০০:৩৩, ১২ অক্টোবর ২০২৫

ইসলামের প্রথম যুগে মুসলমানদের কেবলা ছিল বাইতুল মুকাদ্দাস। পরে পরিবর্তন করে কাবাকে কেবলা হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। এই কেবলা পরিবর্তনের ঘটনা ঘটে এমন এক সময়, যখন নবীজি (সা.) সাহাবিদেরকে নিয়ে মদিনার এক মসজিদে নামাজরত অবস্থায় ছিলেন। নামাজ শুরু করেন বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে ফিরে। অতঃপর নামাজে থাকা অবস্থাতেই কাবার দিকে ফিরেন। এজন্য এই মসজিদের নামকরণ করা হয় কেবলাতাইন তথা দুই কেবলার মসজিদ।
সম্প্রতি মদিনার ঐতিহাসিক কেবলাতাইন মসজিদ প্রকল্পে ইসলামি ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং ধর্মীয় স্থাপত্যের সৌন্দর্য রক্ষায় সৌদি সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য হলো, সেই স্মৃতিবিজড়িত মসজিদটিকে সংরক্ষণ করা, যেখানে মুসলমানদের কেবলা বদলের ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল।
মদিনার উত্তর-পশ্চিমাংশে অবস্থিত এই মসজিদটি দীর্ঘ সময় ধরে নানা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের মধ্য দিয়ে এসেছে। বিশেষ করে দুই পবিত্র মসজিদের খাদেম বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের নেতৃত্বে এর ব্যাপক সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন সম্পন্ন হয়। এতে প্রতিফলিত হয়েছে ইসলামি নিদর্শন সংরক্ষণে এবং দর্শনার্থীদের সেবা উন্নয়নে সৌদি সরকারের আন্তরিকতা।
আল-মদিনা রিজিয়ন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি এই প্রকল্পের তত্ত্বাবধান করছে। পুরো কমপ্লেক্সের আয়তন ২ লাখ ৬৫ হাজার বর্গমিটার, যার মধ্যে মূল মসজিদটি ৩ হাজার ৯০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে বিস্তৃত এবং একসঙ্গে প্রায় ২০ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন।
দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মসজিদের চারপাশে ৩০০টির বেশি গাড়ি ও বাস পার্কিং স্পেস তৈরি করা হয়েছে। ছায়ার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ৫০টিরও বেশি ছাউনি, যার নিচে ১০০টি কুলিং মিস্ট ফ্যান বসানো হয়েছে, যাতে গরমে মুসল্লিদের আরামদায়ক পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়। প্রশস্ত করিডর ও উন্মুক্ত প্রাঙ্গণ দর্শনার্থীদের চলাচল সহজ করেছে, সৃষ্টি করেছে এক নান্দনিক ও প্রশান্ত পরিবেশ।
বাদশাহ সালমানের নির্দেশে কেবলাতাইন মসজিদ এখন সপ্তাহের সাত দিন, ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকে। ফলে মুসল্লিরা যেকোনো সময় এসে নামাজ আদায় ও আধ্যাত্মিক প্রশান্তি লাভ করতে পারেন।
সৌদি সরকারের এই প্রকল্প ইসলামি ঐতিহ্য রক্ষা, ধর্মীয় স্থাপনার উন্নয়ন এবং মুসলমানদের আত্মিক বিকাশে সেবার প্রতিশ্রুতির এক উজ্জ্বল নিদর্শন হয়ে উঠেছে।
সূত্র : সৌদি প্রেস এজেন্সি